স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ জুলাই : রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মঙ্গলবার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এদিন বৈঠকের পর মহাকরণের সাংবাদিক সম্মেলন করে সার্বিক তুলে ধরেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি জানান ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগাযোগ যোজনা নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পে বেকার যুবক-যুবতীদের মোবাইল ফোন প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিভিন্ন মহাবিদ্যালয় সহ মোট ৩৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের এই মোবাইল প্রদান করা হয়। এই মোবাইল ক্রয় করার জন্য ৫,০০০ টাকা করে প্রদান করা হয় প্রতি ছাত্র-ছাত্রীকে। এই বছর ১৫ হাজার যুবক যুবতীকে মোবাইল ক্রয় করার জন্য ৫০০০ টাকা করে প্রদান করার বিষয়ে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই মোবাইল প্রদান করার ক্ষেত্রে ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারের খরচ হবে। এই মোবাইল পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টাকা প্রদান করা হয়। গতবছর ৯,৪২৮ জনকে মোবাইলের জন্য টাকা প্রদান করা হয়েছে। তার জন্য রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৬৮ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিধানসভায় আইন পাস করানো হয়েছিল। তারপর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে উপাচার্য নিয়োগ করার জন্য সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে তিনজনের। বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ১০ টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। সার্চ কমিটি ঠিক করবে কে উপাচার্য হবেন। তারপর ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। আপাতত জুডিশিয়াল একাডেমিতে ক্লাস শুরু করা হবে। জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাজ্য সরকার ৯ একর ২৩ শতক জায়গা বিনামূল্যে প্রদান করবে। এই বিষয়ে এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
পাশাপাশি এদিন মন্ত্রীসভা একটি রুলসের অনুমোদন দিয়েছে। এই রুলসের নাম দি ত্রিপুরা বেনিং অফ আর্মস রেগুলেটেড ডিপোজিট স্কিম রুলস-২০২২। কেন্দ্রীয় সরকার চিটফান্ড গুলিকে কন্ট্রোল করার জন্য ২০১৯ সালের একটি আইন প্রণয়ন করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই আইনটিকে রাজ্য সরকার গ্রহণ করার বিষয়ে এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। রাজ্যে কোন ধরনের বেআইনি চিটফান্ডের কার্যকলাপ যেন না থাকে তার ব্যবস্থা এই আইনে রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। পাশাপাশি তিনি চিট ফান্ডের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা তুলে ধরেন। সমবায় দপ্তরে ৪২ টি শূন্যপদ সৃষ্টি করার জন্য এই দিন মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। তারমধ্যে এল ডি সি রয়েছে ১২ টি, গ্রুপ সি রয়েছে ১৮ টি পদ, গ্রুপ ডি রয়েছে ১২ টি পদ। যুব কল্যাণ দপ্তরে গেজেটেড ২০ টি স্পোর্টস অফিসারের পদ সৃষ্টি করার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভা অনুমোদন প্রদান করেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরে ৩ টি পদ সৃষ্টি করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। এই তিনটি পদের মধ্যে রয়েছে গেজেটেড-এ জয়েন্ট ডাইরেক্টরের একটি পদ, ডেপুটি প্রজেক্ট অফিসারের একটি পদ এবং ইউ ডি সি-র একটি পদ রয়েছে। পাশাপাশি সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরে ২১ টি সি.ডি.পি.ও-র শূন্যপদ পূরণ করার জন্য রাজ্য মন্ত্রী সভা অনুমোদন প্রদান করেছে বলে জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী রতন লাল নাথ জানান ইতিমধ্যে শিক্ষা দপ্তরে ৩,২৫১ জন শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তরে টি.এস.আর নিয়োগ করা হয়েছে ১,৪৪৩ জন। এস.পি.ও নিয়োগ করা হয়েছে ১,৪০০ জন। টি.পি.এস.সি-র মাধ্যমে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর নিয়োগ করা হয়েছে ৩৮ জন। জুনিয়র মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে ২৮৮ জন। নতুন করে আরো ১৬৪ জন জুনিয়র মেডিকেল অফিসার চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পাওয়া গেছে ১৫৬ জন। জুডিশিয়াল অফিসার গ্রেড-৩ নিয়োগ করা হয়েছে ১১ জন। পিএ গ্রেড-টু চাওয়া হয়েছিল ১৭৭ জন। কিন্তু পাওয়া গেছে ৫০ জন। পিএ গ্রেড-টু পরবর্তী সময় আরো ৪৭ জন নিয়োগ করা হয়েছে। টিসিএস ৪০ জন ও টি পি এস ৪০ জন নিয়োগ করা হয়েছে। এলডিসি নিয়োগ করা হয়েছে ৯৬ জন। সাব ইন্সপেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে মোট ৬৫ জন। টি এফ এস গ্রেড-টু নিয়োগ করা হয়েছে ৯ জন। ডিপ্লোমা লেভেল লেকচারার ৫৭ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এগ্রিকালচার অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে ৬২ জন। ফুড সেফটি অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে ৮ জন। এছাড়া আরও ৬০০ জন টেট টিচার নিয়োগ করার জন্য টি.আর.বি.টি-র কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।