স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২১ জুন :২১ জন আন্তর্জাতিক যোগা দিবস। শনিবার গোটা বিশ্বে এই দিনটি পালিত হয়, যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মানের মধ্য দিয়ে। রাজ্যের ঐতিহ্য ও রাজন্য বিজড়িত রুদ্রসাগরের নীরমহলে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালিত হয় এদিন। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা লোকসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন যোগাকে কোনো ধর্মের মধ্যে বেঁধে রাখা যায় না। যোগা সকলের জীবনশৈলীর অঙ্গ হওয়া উচিত। দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যেও যোগা কে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মিজোরামে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী থাকা সত্ত্বেও সেখানে যোগা হয়ে থাকে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে।
শুধু তাই নয়, বর্তমানে মুসলিম সমাজের পিঠস্থান মক্কা-মদিনাতেও যোগা অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি আরব এবং মঙ্গোলিয়াতেও যোগা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য বিশেষ গর্বের। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির জন্যই যোগা স্থান পেয়েছে গোটা বিশ্বের মানচিত্রে। BYTE BIPLAB
এদিকে উপস্থিত রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, ২০১৪ সালের সেপটেম্বর মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্রথমবার ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস হিসেবে পালন করার কথা বলেছিলেন। এর ঠিক তিন মাস পর রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভোটাভুটির মাধ্যমে ১৭৭ টি দেশ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যকে সমর্থন করে। এরপর ২০১৫ সালের ২১ জুন থেকে প্রতি বছর আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। ২০২৫ সালে এই আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের থিম হচ্ছে এক পৃথিবী এক স্বাস্থ্য। আগে একটা সময় মোক্ষ লাভের জন্য যোগা করা হতো। আর বর্তমানে যোগা করা হয় শরীর সুস্থ রাখার জন্য। এদিন এই আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক কিশোর বর্মন এবং প্রশাসনের পদাধিকারীদের পাশাপাশি দলের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং কার্যকর্তারা।
প্রত্যেকেই এদিন যোগ ব্যায়াম করেন। শনিবার যথাযোগ্য মর্যাদা এবং সম্মানের মধ্য দিয়ে রাজ্যের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত ঊনকোটির পুণ্য তীর্থ ক্ষেত্রে পালিত হলো আন্তর্জাতিক যোগা দিবস।এদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস, কারামন্ত্রী সান্তনা চাকমা, ঊনকোটি জেলার জেলা শাসক তমাল মজুমদার, জেলা পুলিশ সুপার সুধাম্বিকা আর, পর্যটন সচিব উত্তম কুমার চাকমা এবং উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা অনিমেশ দেববর্মা। এই কর্মসূচির আয়োজনে ছিল রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক দপ্তর, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, রাজ্য আয়ুষ মিশন ও ঊনকোটি জেলা প্রশাসন। প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে ঘেরা ঊনকোটি স্থানে যোগা দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এই প্রাচীন ভারতীয় সাধনা ও ধ্যানচর্চার বার্তা আরও গভীরতর এবং প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে এদিন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, যোগা শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি একটি জীবনধারা। বর্তমান সময়ে মানসিক চাপ, অবসাদ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো অসুখ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে যোগা সকলের স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষা করে। যোগা প্রতিদিনের জীবনে আত্মনিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য ও সংহতি বজায় রাখতেও সহায়ক। এদিকে রাজ্যের কারা মন্ত্রী সান্তনা চাকমা তাঁর বক্তব্যে বলেন, যোগা প্রত্যেকের শরীর, মন ও আত্মাকে একসাথে সংযুক্ত করে। তরুণ সমাজকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং নেশার কড়াল গ্রাস থেকে মুক্ত করার জন্য এই যোগার তাৎপর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য যোগাই হচ্ছে একমাত্র পথ। আন্তর্জাতিক যোগা দিবস কে কেন্দ্র করে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে এদিন সর্বত্র। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পাশাপাশি স্কুল কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়।

