স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ জুন : একবছর হয়েছে তিপ্রা মথা ক্ষমতায় এসেছে। গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের দাবি তুলছে। এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া দিচ্ছে রাজনৈতিক দল। কিন্তু তারা পানীয় জল, বিদ্যুৎ, রাস্তা সংস্কার সহ কোন কিছু দাবি তুলছে না রাজ্য সরকারের কাছে। আসলে গ্রেটার তিপরাল্যান্ড হলো প্রলোভন। এই প্রলোভন দিয়ে তিপ্রা মথা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তাই এগুলি জনজাতিদের সংশোধন করা দরকার। শনিবার ১২৫ তম সংবিধান সংশোধনির মাধ্যমে এ ডি সি এলাকায় ত্রিপুরার টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল গঠন এবং অষ্টম তফসিলে ককবরক ভাষায় সংযুক্তিকরণ সহ ভিলেজ কমিটির নির্বাচনের দাবিতে রাজভবন অভিযানে বক্তব্য রেখে এই কথা বলেন বিরোধীদলীয় নেতা মানিক সরকার। জি এম পি এবং টি ওয়াই এফ -এর যৌথ উদ্যোগে এদিন রাজভবন অভিযান হয়। মেলার মাঠ থেকে রাজভবন অভিযান শুরু হয়ে সার্কিট হাউজ এলাকায় গিয়ে সভা অনুষ্ঠিত করা হয়।
সভায় বিরোধী দলনেতা বলেন, পাহাড়ের জনজাতি এবং বাঙালীদের একে অপরকে আলাদা করে ভাবা যায় না। জাতি জনজাতির মেলবন্ধনে রাজ্য রাজন্য আমল থেকেই চলে এসেছে। যদি জনজাতি এবং বাঙালীদের আলাদা করে দেখা হতো তাহলে ত্রিপুরা আর এই জায়গায় এসে পৌছাতে পারত না। তাই তাদের জনবিচ্ছিন্ন করতে হবে। যাতে তিপ্রা মথা মানুষকে বিভ্রান্ত না করতে পারে বলে জানান তিনি। আগে মানুষ বাঁচলে ২৩ -এর নির্বাচন। রেগা কাজ ৯০-৯২ দিন হয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের কাজ নেই। আইন বহির্ভূত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে জায়গা কাজ করা হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো মন্ডলের বহু নেতা কাজ না করে ১০০ দিনের মজুরি পাচ্ছেন। আর শ্রমিকরা যখন কয়েকদিনের কাজ পাচ্ছে তখন তাদের টাকাতেও ভাগ বসাচ্ছে মন্ডলের নেতারা। নাহলে কাজ দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। এই লুন্ঠন বন্ধ করতে হবে। নাহলে রাজ্যে কাজ, খাদ্যের অভাব থাকবে। গত চার বছরে অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে, সন্তান বিক্রি এগুলো হচ্ছে। এগুলি বামফ্রন্ট তৈরি করা কথা নয়। মানুষ বাস্তবতার সম্মুখীন। এমনকি এখন সোস্যাল অডিট বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতি মাসে পঞ্চায়েত বৈঠক ডেকে গ্রামে গ্রামে বসে হিসেব দেওয়া হয় না। গত বছর রেগা কাজে ৪৮৫ কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যায় নি। ফলে এবছর রেগা কাজ আরো কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মানিক সরকার।
ধলাই জেলার ম্যালেরিয়া প্রদুর্ভাব হয়েছে। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্য শিবির এবং চিকিৎসা পরিষেবা নেই। এবং যারা ছোটখাট আহত হলে রোগী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগরতলা জিবি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে ওষুধ, চিকিৎসার সরঞ্জাম নেই। তাই চিকিৎসকরা এম্বুলেন্স দিয়ে জিবি হাসপাতালে রেফার করে দিচ্ছেন রোগীদের। তবে এম্বুলেন্সের যে পেট্রোল-ডিজেলের প্রয়োজন হয় সেটার ব্যয়ভার রোগীর পরিজনদের বহন করতে হচ্ছে। রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চচির। বিদ্যুৎ নেই। চিকিৎসকরা সার্জারি করতে পাচ্ছে না। ব্যঙ্ক পরিষেবা ভেঙ্গে পড়েছে। ৫০ হাজার নাম সামাজিক ভাতার তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল হলেন একজন রাবার স্ট্যাম্প। তাঁর কোন ভূমিকা নেই। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ বাঁচবে কিভাবে। তাই নিয়ে এদিন প্রশ্ন তুলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তাই মানুষকে লড়াই আন্দোলন এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। আয়োজিত অনুষ্ঠানে এদিন এছাড়া উপস্থিত গণমুক্তি পরিষদের রাজ্য সভাপতি জীতেন্দ্র চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।