স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক , আগরতলা, ১১ জুন : ফিল্মি ঘটনাকে ছাপিয়ে গেল রাজ্যের রোমহর্ষক খুনের ঘটনা। গন্ডাছড়ায় এক দোকানের আইসক্রিম ডিপ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হয় শরিফুল ইসলাম নামে ২৪ বছর বয়সী যুবকের মৃতদেহ। মৃত যুবকের বাড়ি রাজধানীর ইন্দ্রনগর কবরখলা এলাকায়। মৃতদেহ উদ্ধারের পর বুধবার এনসিসি থানায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, রাজধানীর ইন্দ্রনগর থেকে নিখোঁজ শরিফুল ইসলামের মৃতদেহ উদ্ধার গণ্ডাছড়ার এক পান দোকান থেকে।
৮ জুন রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিল শরিফুল ইসলাম। ত্রিকোণ প্রেমের শিকার নয়তো শরিফুল। জানা যায় রবিবার রাতে ডাক্তার দিবাকর সাহা নামে এক ব্যক্তি শরিফুলকে গিফট দেওয়ার নাম করে ফোন করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে নিখোঁজ ছিল শরিফুল। শরিফুলের পরিবারের পক্ষ থেকে এনসিসি থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। পাশাপাশি ডাক্তার দিবাকর সাহাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ দফায় দফায় দিবাকরকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে গোটা রহস্যের পর্দা ফাঁস করে। তারপর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে মোট ৬ জনকে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বুধবার গণ্ডাছড়ার এক পান দোকানের ডিপ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করা হয় শরিফুলের মৃতদেহ। ঘটনার খবর পেয়ে শরিফুলের পরিবারের লোকজন ছুটে যায় গণ্ডাছড়ায়। মৃত শরিফুলের এক নিকট আত্বিয় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানায় রবিবার রাতে গিফট দেওয়ার নাম করে ফোন করে শরিফুলকে নিয়ে যায় ডাক্তার দিবাকর সাহা।
তারপর থেকে শরিফুল নিখোঁজ ছিল। এরই মাঝে ওনারা ডাক্তার দিবাকরকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। বুধবার দুপুরে জানতে পারেন শরিফুলকে পাওয়া গেছে গণ্ডাছড়ায়। যথারীতি ওনারা গণ্ডাছড়ায় ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান ডিপ ফ্রিজে শরিফুলের মৃতদেহ।এনসিসি থানার পুলিশ শরিফুল নিখোঁজের তদন্তে নেমে গোটা রহস্যের পর্দা ফাঁস করে। পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান ত্রিকোণ প্রেমের শিকার শরিফুল। গোটা ঘটনার বিষয়ে বলতে গিয়ে জেলা পুলিশ সুপার জানান শরিফুল একটি যুবতীর সাথে প্রেম করতো। মাঝে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তারপর ঐ যুবতীর সাথে ভাই সম্পর্কের ডাক্তার দিবাকর সাহার সাথে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। অর্থাৎ ত্রিকোণ প্রেমের সুত্রপাত। ৮ জুন রাতে ডাক্তার দিবাকর গিফট দেওয়ার নাম করে শরিফুলকে নিয়ে যায় দক্ষিন ইন্দ্রনগর জয়দীপ দাসের বাড়িতে। সেখানে আগে থেকে ছিল অনিমেষ যাদব ও নবনিতা দাস।
জয়দীপ দাসের বাড়িতে শ্বাসরুদ্ধ করে শরিফুলকে হত্যা করে ডাক্তার দিবাকর সাহা। ঘটনার দুইদিন পূর্বে একটি ট্রলি ক্রয় করে ঘরে নিয়ে রেখেছিল ডাক্তার দিবাকর সাহা। সেই ট্রলিতে শরিফুলের মৃতদেহ ঢুকানো হয়। তারপর জয়দীপ দাসের বাড়ির অপর একটি ঘরে ট্রলিটি রাখা হয়। ৯ জুন ডাক্তার দিবাকর সাহার বাবা দীপক সাহা ও মা দেবিকা সাহা একটি ইকো গাড়ি নিয়ে গণ্ডাছড়া থেকে জয়দীপ দাসের বাড়িতে আসে। তারপর সেই গাড়িতে করে ট্রলি ভর্তি শরিফুলের মৃতদেহ গণ্ডাছড়ায় নিয়ে গিয়ে পান দোকানের ডিপ ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা গোটা ঘটনা স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক বুধবার গণ্ডাছড়া থেকে শরিফুলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় পান দোকানের ডিপ ফ্রিজ থেকে।শরিফুলের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর রাজধানীর ইন্দ্রনগর এলাকায় পৌঁছানোর পর এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোঁকের ছায়া। দাবি উঠেছে অভিযুক্তদের কঠোর থেকে কঠোর তম শাস্তি প্রদানের।