আগরতলা, ৮ জুন (হি.স.) : সরকার ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সহ সার্বিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। তাই বিনিয়োগকারীরা এখন বিনিয়োগের জন্য রাজ্যের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। রবিবার পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার বামুটিয়া ব্লকের তুফানিয়া লুঙ্গা চা এস্টেট জেবি স্কুলে আয়োজিত মেগা প্রশাসনিক শিবিরে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে এলাকার চা শ্রমিকদের মধ্যে জমির পাট্টা বিতরণ করা হয়।
রবিবার বামুটিয়া আরডি ব্লকের অধীন তুফানিয়া লুঙ্গা চা এস্টেট জেবি স্কুলে মেগা প্রশাসনিক শিবির অনুষ্ঠিত হয়। এই শিবিরে এলাকার চা শ্রমিকদের মধ্যে জমির পাট্টা বিতরণ করা হয়। এছাড়াও নেশাবিরোধী অভিযান, বৃক্ষরোপণ এবং রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ, পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক মেঘা জৈন, বামুটিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস সহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। সারা রাজ্যে ৪ হাজার ৬০০ টি প্রতি ঘরে সুশাসন শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজ্যের এই কর্মসূচিকে সারা দেশ স্বাগত জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার কেবলমাত্র বিল্ডিং বানানোই নয়, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান এবং শিক্ষা প্রভৃতি সব বিষয়ে উন্নয়ন করে চলছে। জনজীবনের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সেগুলি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের দিশায় কাজ করে চলছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর অষ্টলক্ষ্মীর এই উত্তর পূর্বাঞ্চলে ‘পার কেপিটা ইনকামে’ ত্রিপুরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ‘স্টেট জিএসটি’র ক্ষেত্রেও ত্রিপুরা দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। তিনি আরো জানান, সম্প্রতি দিল্লিতে নর্থইস্ট জোনের ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেশ-বিদেশের বহু লোক এসেছে। এই সামিটে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। একমাত্র ত্রিপুরার জন্যই ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মৌ স্বাক্ষরিত হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে বিনিয়োগকারীরা এখন ত্রিপুরার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন হচ্ছে। তাই দেশের ২৮ টি রাজ্যের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলার দিক দিয়ে ত্রিপুরা সুন্দর স্থানে অবস্থান করছে। রাজ্যের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর হিরা মডেলের প্রভাবও অনুভূত হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গত ৩৫ বছর এবং মাঝের পাঁচ বছর এর উন্নয়ন ও বর্তমান সরকারের সাত বছরের উন্নয়ন মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। এই সরকারের লক্ষ্য সব মানুষের মৌলিক সমস্যা সমাধান করা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, নেশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। নেশায় আসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কাজও করছে সরকার। বাজেটে আট জেলায় আটটি নেশা মুক্তি কেন্দ্র করা হচ্ছে। বিশ্রামগঞ্জে ডোনার মন্ত্রকের আর্থিক সহযোগিতায় ১৯৮ কোটি টাকা ব্যয় করে অত্যাধুনিক নেশা মুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। নেশা মুক্ত রাজ্য গঠনে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা।