Wednesday, June 18, 2025
বাড়িরাজ্যভাষা শহীদ দিবস উদযাপন

ভাষা শহীদ দিবস উদযাপন

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৯ মে :১৯শে মে ভাষা শহীদ দিবস। আমারা বাঙালি দলের রাজ্য কার্যালয়ে দিনটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করা হয়। শহীদদের প্রতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন আমরা বাঙালি দলের রাজ্য সম্পাদক গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল। তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য একাদশ শহীদের আত্মবলিদান দিবস। ১৯৬১ সালে বর্তমান অসম রাজ্যের কাছাড় জেলার শিলচরে এমনই একটি দিনে বাংলাভাষা তথা বাঙালীদের আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্যে এক গণআন্দোলনে হাজার হাজার বাঙালী জড়ো হয়েছিল যাতে কমলা ভট্টাচার্য, শচীন্দ্র মোহন পাল, চন্ডীচরণ সূত্রধর সহ ১১ জন ছাত্র-যুব পুলিশের গুলিতে প্রাণ বিসর্জন করেছিলেন।

তৎকালীন অসমের বাঙালী বিদ্বেষী মুখ্যমন্ত্রী বিমলাপ্রসাদ চালিহা জোর করে সমগ্র অসমে শিক্ষার মাধ্যম থেকে শুরু করে সমস্ত কাজে অহমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেবার প্রতিবাদেই বাঙালীরা আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। এই ঘটনা ওপার বাংলা ৫২-এর ভাষা আন্দোলনকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। সেদিনও সেখানকার উর্দুসাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী জোর করে উর্দুভাষা চাপিয়ে দিয়ে বাংলাভাষা, কৃষ্টি সংস্কৃতি ধ্বংসের মাধ্যমে সংখ্যাগুরু বাঙালীদের আত্মপরিচয় তথা মর্যাদাকে ধ্বংস করে বাঙালী জাতিসত্ত্বাকেই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল। গণতান্ত্রিকভাবে তা প্রতিহত করতে গিয়ে আব্দুল, জব্বার, রফিক, সালাম নামে ৫ জন বাঙালী ছাত্র-যুবককে পুলিশের গুলিতে প্রাণ বিসর্জন করতে হয়েছিল। তাঁদের আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি। কারণ বাহান্নের ভাষা আন্দোলনের অন্তিম পরিণতিই হল সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি। একইভাবে ৬১ সালে অসমের বুকে বাংলাভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনের ফলশ্রুতিতেই এখনো অসমে বাংলা ভাষা ও বাঙালী জাতির পরিচিতি বেঁচে আছে। সেই বিচারে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও ৬১ এর ভাষা আন্দোলন বাঙালীজাতির কাছে পরম গৌরবের। গোটা বাঙালীজাতি মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে নিহত শহীদ তথা দধিচীদের কাছে চির ঋণী।

কারণ সেদিন তাঁরা যদি মায়ের মুখের ভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষায় বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপ না দিতেন তাহলে এতদিনে ভারত তথা পৃথিবীর বুক থেকে বাংলা ভাষা ও বাঙালী জাতি হয়ত হারিয়ে যেত। বস্তুতঃ ভাষা যেমন একটি জাতির মূল পরিচয়, তেমনি মাতৃভাষা হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট জাতির মনে প্রচন্ডভাবে হীনমণ্যতা বাসা বাঁধে, শোষণ বঞ্চনার শিকার হয়, পরিণামে জাতি সত্ত্বাই ধ্বংস হয় ইতিহাসে যার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।দুর্ভাগ্যের বিষয় ওপার বাংলায় বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মধুরতম, কোমলতম ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পেলেও স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে সংবিধান স্বীকৃত বাংলাভাষা সরকারী-বেসরকারী সর্ব স্তরে এখনো প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। ফলে কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে সব কিছুতেই বাঙালীরা ক্রমশঃ পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেক লড়াই সংগ্রামের পর জাতীয়স্তরে বাংলাভাষা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা লাভ করলেও সরকারীস্তরে এখনো তা প্রতিষ্ঠা পায়নি। এরজন্য দরকার তীব্র গণআন্দোলন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!