স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৯ মে :রবিবার আগরতলা চানমারি এলাকার মানুষ এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়। ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সংলগ্ন নির্মাণের কাজের জন্য পাইলিং -এর গর্তে পড়ে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের দুই শিশুর। মৃত দুই শিশুর বাবার নাম কৃষ্ণ দেবনাথ। শনিবার থেকে উনার এগারো বছরের ছেলে প্রসেনজিৎ দেবনাথ এবং সাত বছরের শিশুকন্যা প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ নিখোঁজ ছিল। রবিবার দুপুরে এই পাইলিং এর গর্ত থেকে উদ্ধার হয় উনার দুই সন্তানের নিথর দেহ। সোমবার বড়জলা বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক ডাক্তার দিলীপ দাস নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনার সম্পর্কে অবগত হন।
প্রাক্তন বিধায়ক ডাক্তার দিলীপ দাস বলেন এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট নির্মাণ সংস্থা। তিনি বলেন ঘটনাস্থলে এসে তিনি জানতে পেরেছেন, এই নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত সাইড ইঞ্জিনিয়ার, কন্টাকটার থেকে শুরু করে যারা রয়েছেন তারা সকলেই পালিয়ে গেছেন। তারা এই ঘটনার জন্য দায়ী। একই সাথে দায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তর অর্থাৎ আগরতলা পুর নিগম। আগরতলা পুর নিগমের পক্ষ থেকে নজরদারি থাকলে এই ঘটনা সংগঠিত হতো না। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে আগরতলা পুর নিগমের অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজারের কাছে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে তার জন্য তাদের নজরদারির প্রয়োজন।
এখানে এসে দেখা গেছে বিনা অনুমতিতে হুকলাইন ব্যবহার করছে নির্মাণ সংস্থা। তিনি আরো বলেন জনগণের দায়িত্ব প্রশাসনের কাছে। কারণ সব কাজে জনগণ হাত দিতে পারে না। সুতরাং এই ঘটনার পেছনে বিদ্যুৎ নিগম, আগরতলা পুর নিগম এবং ওয়াটার রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট পুরোপুরি দায়ী। প্রাক্তন বিধায়ক আরো বলেন এ ধরনের প্রানের কোন মূল্য হয় না। তারপরও এই ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কারণে কতটুকু মূল্য তিনি দিতে পারবেন সেটাই দাবি করা হবে উনার কাছে। তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, এই ঘটনা অবিলম্বে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যারা দোষী তাদের যাতে কঠোর শাস্তি হয়। এদিকে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন এলাকার বিধায়ক সুদীপ সরকার, প্রাক্তন সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত সহ সিপিআইএমের একটি প্রতিনিধি দল। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। প্রশাসন যাতে সুষ্ঠু তদন্ত করে এবং অসহায় পরিবারকে সহযোগিতা করে। এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেও দাবি উঠছে নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে যাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কারণ পাইলিং এর কাজের জন্য ব্যবহার করা গর্ত এভাবে উন্মুক্ত করে রাখা অত্যন্ত অপরাধ। যার পরিণাম ভুগতে হচ্ছে এক অসহায় পরিবারকে।