স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১২ মে : রাজ্য সরকারের বহুগর্বের জিবি হাসপাতালে পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা সঠিকভাবে মিলছে না। কয়েক মিনিট অন্তর অন্তর হাসপাতালে আনা হয় সংকটাপন্ন রোগীকে। এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পর্যন্ত বিকাশ ত্রিপুরার বিদ্যুৎ পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে। সোমবার রাতে দীর্ঘক্ষণ জিবি হাসপাতালে ছিল না বিদ্যুৎ। গোটা হাসপাতাল হয়ে ওঠে যমপুরী। একদিকে হাসপাতালে রোগীদের থিকথিকে ভিড়, অপরদিকে হাসপাতালের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র গরম যন্ত্রণায় কাতড়ায় রোগীরা। শুধু তাই নয় মোবাইলে টর্চ এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে হাসপাতালে শয্যায় বসে থাকা রোগীদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে হতাশার ছাপ।
শারীরিক অস্বস্তি তাদের অশান্ত করে তুলেছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা পর্যন্ত মোমবাতি এবং মোবাইল ফোনের টর্চ জ্বালিয়ে পরিষেবা দেন রোগীদের। এই দৃশ্য দেখলে প্রশ্ন উঠে স্মার্ট সিটির, স্মার্ট হাসপাতালের, স্মার্ট বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে হাসপাতালের জেনারেটর কোথায় ছিল? জেনারেটর চালানো হয়নি কেন? রোগীদের মুখে মুখে এমন প্রশ্ন উঠলেও হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে কেউ কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এমনকি হাসপাতালের শৌচাগারে যাওয়ার জন্য রোগীদের মোমবাতি ভরসা ছিল এদিন। এমন দৃশ্য হাসপাতালে কোন নতুন বিষয় নয়। বিভিন্ন সময় এ ধরনের দৃশ্য হাসপাতালে লক্ষ্য করা গেছে। অথচ হাসপাতালে মধ্যে উন্নত জেনারেটর পরিষেবা, সোলার সিস্টেম দেওয়ার প্রয়োজনটুকু মনে করে নি এখনো বিদ্যুৎ নিগম।
এতে করে রোগীদের শারীরিক যন্ত্রণায় ছটফট বাড়ে। কে শুনে কার কথা! শুধুমাত্র মঞ্চে দাঁড়িয়ে এবং সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং সোলার সিস্টেমের গল্প শুনিয়ে যাচ্ছেন মহাশয়। সুতরাং, গল্পের গরু গাছে চড়ে অবস্থা। এদিকে খোয়াইয়ে বিদ্যুৎ চপলতা ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় খোয়াই জেলা হাসপাতালেও দীর্ঘক্ষণ ছিল না বিদ্যুৎ। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা থেকে দুই ঘন্টারও বেশী সময় ধরে বিদ্যুৎহীন ছিল জেলা হাসপাতাল। মারাত্মক বিঘ্নিত হয়েছে চিকিৎসার কাজ। জেলা হাসপাতালের নিজস্ব জেনারেটর বিকল। বিকল্প ব্যবস্থা কিছুই নেই। সোমবার সন্ধ্যায় জেলা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল চিকিৎসাধীন রোগীর পরিবারের লোকজন মোমবাতির আলোয় রোগীকে ঔষধ খাওয়াচ্ছেন। কেউ আবার মোবাইল ফোনের টর্চ জ্বালিয়ে রেখেছে। প্রাকৃতিক কাজের জন্য রোগীকে শৌচাগারে নিয়ে যেতেও বেগ পেতে হয় রোগীর পরিবারকে। জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সিতে চিকিৎসকও মোবাইল ফোনের টর্চের আলোয় রোগীদের প্রেসক্রিপশন লিখছেন। এক প্রকার ভাবে নিরাশ করেছে বিদ্যুৎ পরিষেবা হাসপাতালের রোগী সহ সাধারণ মানুষকে।