Monday, June 16, 2025
বাড়িরাজ্যআমন্ত্রণে তিন শতাধিক মানুষ খেতে না পারায় পোল্ট্রির ফার্ম ঘেরাও করলো গ্রামবাসী,...

আমন্ত্রণে তিন শতাধিক মানুষ খেতে না পারায় পোল্ট্রির ফার্ম ঘেরাও করলো গ্রামবাসী, সম্বিত ফিরল পোল্ট্রি ফার্মের কর্ণধারের,

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১২ মে :ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এক মাসের সময় চেয়ে নিলেন পোল্ট্রি ফার্মের কর্ণধার তথা চড়িলাম এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী স্বপন দেবনাথ। ঘটনা মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ চড়িলাম চৌমুহনি পাড়া এলাকায়। এলাকার মানুষ স্বপন দেবনাথের পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধ এবং মাছির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে মঙ্গলবার সকালে পোল্ট্রি ফার্মের সামনে ছুটে আসেন এবং মালিক স্বপন দেবনাথকে ঘেরাও করেন।

 গ্রামবাসীরা স্বপন দেবনাথের কাছে পোল্ট্রি ফার্মের কারণে এলাকার মানুষের কি পরিমান দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেই বিষয়গুলো তুলে ধরেন। গ্রামবাসীরা ফার্মের মালিককে বলেন, আপনি ব্যবসা করুন গ্রামবাসীর কোনো আপত্তি নেই। কারণ পোল্ট্রি ফার্ম তৈরি করেছেন ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু আপনার পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধ এবং মাছির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রামবাসীদের জীবন। ঘরের মধ্যে পর্যন্ত বসে কথা বলা যাচ্ছে না। মুখে রুমাল দিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। ঘরের মধ্যে মশারি ঝুলিয়ে ভাত খেতে হচ্ছে। শিশুদেরকে ২৪ ঘন্টা দরজা বন্ধ করে ঘরে রাখতে হচ্ছে। মাছির যন্ত্রণায়। গ্রামের কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতরা আসতে চায় না। কারণ অনুষ্ঠান বাড়িতে আসলেও মাছির যন্ত্রণায় না খেয়ে ফিরে যায়। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে গোটা গ্রামের মানুষের জীবন। দুর্গন্ধ এবং মাছি বন্ধ করতে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মঙ্গলবার সকালে গ্রামের প্রায় ২০০ জন মানুষ একত্রিত হয়ে পোল্ট্রি ফার্মের কাছে ছুটে এসে ফার্মের মালিক স্বপন দেবনাথকে ঘেরাও করে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে ফার্মের মালিক স্বপন দেবনাথ গ্রামবাসীদের কাছে এক মাসের সময় চেয়েছেন। তিনি গ্রামবাসীদের বলেন অতি দ্রুত তিনি দুর্গন্ধ এবং মাছির উপদ্রব বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি পাঞ্জাব থেকে একটি অত্যাধুনিক মেশিন এনেছেন। প্রতিদিন ফার্মে সকাল এবং বিকালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে।

দুইবার স্প্রে করা হবে। এবং পোল্ট্রি ফার্ম এর লেয়ার মুরগির লেদা গুলোকে ড্রেন করে একটি ট্যাংকির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর অত্যাধুনিক উন্নত মানের মেডিসিন দিয়ে সেই জীবনু ধ্বংস করা হবে। যাতে করে লেদা গুলো থেকে পোকামাকড় সৃষ্টি না হয় এবং মাছির প্রজনন না হয়। মেশিন এসেছে পাঞ্জাব থেকে। কিন্তু এখন শ্রমিকের দরকার। এখন যেহেতু  পাকা ধান কাটার  মরশুম শুরু হয়েছে তাই শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকের যোগান হলে অতি দ্রুত আমি সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এলাকার প্রতিটি বাড়িতে আরো বেশি করে মাছি ধ্বংসের আঠাযুক্ত স্টিকার পেপার বেশি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করব। তিনি আরো বলেন তিনি অত্যন্ত লজ্জিত। ফার্মের একটি শেড খালি করেছেন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছেন। আরো একটি শেডে মুরগি রয়েছে। সেইগুলিও আস্তে আস্তে বিক্রি করে শেড খালি করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নেবেন। এরপর নতুন মুরগির বাচ্চা আবার ফার্মে ঢুকানো হবে। মানুষকে দুঃখ কষ্ট দিয়ে ব্যবসা করা আমার লক্ষ্য নয়। আমিও অনেক চেষ্টা করছি দুর্গন্ধ এবং মাছির উপদ্রব কমানোর জন্য। পরে গ্রামবাসী জানায় এক মাসের মধ্যে যদি দুর্গন্ধ এবং মাছি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে ফার্মের মালিক তাহলে আবার একমাস পরে এসে এই ফার্ম বন্ধ করে দেবে। ঠিক এভাবেই সংবাদমাধ্যমের সামনে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে তাদের দাবি তুলে ধরেছেন। গোটা গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ স্বপন দেবনাথের পোল্ট্রি ফার্মের উপর। এদিকে দূষণ পর্ষদ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায়। কারণ এই সমস্ত পোল্ট্রি ফার্মগুলোর প্রতিবছর দূষণ পর্ষদ কে রিপোর্ট দিতে হয়। দূষণ পর্ষদ সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু এই পোল্ট্রি ফার্মের ক্ষেত্রে দূষণ পর্ষদ সম্পূর্ণ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায় বলে অভিযোগ মহকুমা প্রশাসন স্তরে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!