স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৩০ এপ্রিল :অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেগুলিকে সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উন্নীত করার লক্ষ্যে ভারত সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয় মোট ৪৭৪ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেকে সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উন্নীত করার অনুমোদন দিয়েছে। এই ৪৭৪ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেকে সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উন্নীত করা হয়েছে। যেখানে পোষন ভাটিকা, আর ও ফিন্টার, রঙ্গিন এল ই ডি টিভি এবং অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে। এ জন্য মোট ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করেছেন এবং উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছেন। বুধবার সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য দিয়ে মন্ত্রী টিংকু রায় আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাত্র বন্দনা যোজনায় গর্ভবতী মহিলারা তাদের প্রথম সন্তানের জন্য দুই কিস্তিতে মোট ৫০০০ টাকা এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্য এক কিস্তিতে মোট ৬০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পান। এই অর্থ মায়েদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি প্রদান করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫,৪১৬ জন গর্ভবতী মহিলাকে এই সুবিধার আওতায় আনার। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ১৯,৮২৩ জন গর্ভবতী মহিলাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন টেকনিক্যাল কারনে যে সমস্ত সুবিধাভোগীরা আর্থিক সহায়তা পাননি তাদের মধ্য থেকে ২৭,৪৭০ জনকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
এই যোজনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মোট ১৬ কোটি ৩১ লক্ষ ৯৪ হাজার ২৩০ টাকা ব্যয় হয়েছে। এই যোজনায় ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ২১,০০০ গর্ভবতী মহিলাকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। এজন্য মোট ১১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে বলে অনুমান। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মাতৃপুষ্টি উপহার” গর্ভবতী মহিলাদের জন্য একটি প্রকল্প। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০২১ সালের আগষ্ট মাস থেকে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। প্রতি গর্ভবতী মহিলাকে মোট ২০০০ টাকা ৪ কিস্তিতে প্রসবপূর্ব স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ব্যাঙ্ক একাউন্টে প্রদান করা হয়। এখন পর্যন্ত ৪৩,৬৬৪ জন গর্ভবতী মহিলাকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৮ কোটি ৭৩ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি মিশন বাৎসল্য প্রকল্পে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ২০৫৯ জন শিশুকে প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা করে স্পনসরশিপ প্রদান করা হয়েছে। এতে মোট ৯ কোটি ৮৮ লক্ষ ৩২ হাজার ব্যয় হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৬৩০১ জন শিশুকে স্পনসরশিপ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। এর জন্য মোট ৩০ কোটি ২৪ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে।
সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি ও পোষণ মিশন ২০ সুসংহত শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে রাজ্যে ৫৬ টি আই সি. ডি.এস প্রকল্প রয়েছে। ধলাই জেলার গঙ্গানগর ব্লকে নূতন একটি আই সি. ডি এস প্রকল্পের অফিস খোলার অনুমোদন গৃহীত হয়েছে এবং অতিসত্বর তা খোলা হবে। এই আই, সি. ডিএস প্রকল্পের অধীনে ১০ হাজার ২২২ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। উক্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ২,৭৯,৩৪০ জন শিশু ৬ মাস ৬ বছর এবং ২৮,২৯২ জন গর্ভবতী মহিলা ও প্রসুতি মা নথীভুক্ত আছে। প্রধানমন্ত্রী জনজাতি আধিবাসী ন্যায় মহা অভিযান প্রকল্পের অংশ হিসেবে জনজাতি বসতি এলাকায় ৭৭ টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে জনজাতি বসতি এলাকার ৮৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবন নির্মানের জন্য ১০ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা মঞ্জুরী দিয়েছে। এই ৮৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবন নির্মানের কাজ ত্রিপুরা সরকারের গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মধ্যে ২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবন নির্মানের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে জনজাতি বসতি এলাকায় আরও ৫৩ টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের আধিকারিকরা।