স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২০ এপ্রিল : দেশের পরিস্থিতির মধ্যে পরিবর্তন আসছে। শাসকরা, শোষকরা এবং জন শত্রুরা ভয় পেতে শুরু করেছে। তাদের কাজকর্মের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই বৃহত্তর সংগ্রাম করতে যারা জনগণের কথা চিন্তা করে তাদের সাথে বৃহত্তর মঞ্চ গড়ে তুলতে হবে। মঙ্গলবার আগরতলা টাউন হলে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের রূপকার মহামতি ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের ১৫৬ তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বললেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার।
সভা শুরুতে তিনি লেনিনের প্রতীকৃতিতে পুষ্পাঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, একা লড়াই করার মত অবস্থা বর্তমানে দলের নেই সেটা বুঝতে হবে। তিনি বলেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে শুধুমাত্র ত্রিপুরাতেই বামফ্রন্টের শক্তি রয়েছে। আসামে কিছু সমর্থন থাকলো গণ আন্দোলনে যাওয়ার মত অবস্থা তাদের নেই। যার কারনে যারা জনগণের কথা চিন্তা করে এমন মিত্র শক্তির সাথে হয়ে আন্দোলন আরো বেশি সুদৃঢ় করতে হবে। এদিন মানিক সরকার দলের কর্মী ও নেতৃত্বদের উদ্দেশ্যে বলেন সুবিধাবাদী রাজনীতি ছেড়ে দিতে হবে। ২০২৮ সালে বিধানসভায় নির্বাচন আসলে লড়াই ময়দানে নামবে কিংবা কে কোন নেতৃত্বের স্থান দেবে সেটা ভাবলে এটা হবে সুবিধাবাদী রাজনীতি। এদিকে চিন্তা না করে জনগণের শত্রু আরএসএস পরিচালিত বিজেপি -র বিরুদ্ধে এখন থেকেই ময়দানে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে সমাজের মধ্যে যাদের ব্যক্তিত্ব রয়েছে, এবং জনগণের মূল শত্রুকে ধ্বংস করতে লড়াই ময়দানে দেখা যায় তাদের দলে এনে নেতৃত্বের স্থান দিতে হবে।
আর এটাই হবে প্রথম কাজ। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আরও বলেন, বিজেপি সংবিধান পাল্টে দিয়ে, আইনশৃঙ্খলা কুক্ষিগত করে এবং গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার উপর আক্রমণ করার জন্য ত্রিপুরাকে ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করছে। তারপর সফল হলে ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য রাজ্য গুলিতে কার্যকর করবে। তিনি আরো বলেন দেশে অর্থনৈতিক সংকট, শিল্প সংকট তৈরি করে জীবন যাত্রার মান নিচের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাই শ্রেণী আন্দোলন ও গণ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন যুবকরা কেন সঙ্গে আসছে না এ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন অবশ্যই সৃষ্টি হয়। কিন্তু যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে আছে তাতে যুবকদের আকৃষ্ট করার মতো কোনো স্লোগান নেই। এর জন্য অত্যাচারী জামানা থেকে রক্ষা পেতে নীতি আদর্শ বিসর্জন না দিয়ে বৃহত্তর মঞ্চ গড়ে তোলা ছাড়া আর কোন সুযোগ নেই বলে দাবি করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজিত আলোচনা সভায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য জিতেন্দ্র চৌধুরী, প্রাক্তন সংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত, প্রাক্তন মন্ত্রী অঘোর দেববর্মা সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।