Monday, February 17, 2025
বাড়িরাজ্যভিশন ডকুমেন্ট এখন ভীষণ ডকুমেন্ট হয়ে গেছে : মানিক

ভিশন ডকুমেন্ট এখন ভীষণ ডকুমেন্ট হয়ে গেছে : মানিক

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ মে : ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি দুপুর দুইটার পর থেকে রাজ্যে চলছে ফ্যাসিস্ট সুলভ আক্রমণ, সংবিধান কাজ করছে না, কথা বলার অধিকার নেই, ভোট কেড়ে নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে স্কুলে ভোট লুট হচ্ছে। বাইরে থেকে সমাজদ্রোহীদের এনে এগুলি করছে। কারণ সরকার প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারছে না। মানুষ জবাব চাইবে। তাই তারা এগুলো করছে।

 তাই তারা প্রথম থেকেই টুঁটি টিপে ধরেছে। নীতিবাদী কথা বলা যাচ্ছে না। ২৯৯ টি ভিশন ডকুমেন্ট এখন ভীষণ ডকুমেন্ট হয়ে গেছে। বুধবার টাউন হলে ডি ওয়াই এফ আই -র ১৫ তম সম্মেলন থেকে এই কথা বলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে যুবকদের। ঘরে ঘরে চাকরি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মিসকল দিলে চাকরি মিলবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। আর এখন যখন সেই প্রতারক রাজ্যে আসেন তখন মুখ ঢেকে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের যাচ্ছেন ফুল-বেলপাতা দেওয়ার জন্য। উনার সাথে সাংবাদিকরা কথা বলতে পারেন না। কিছু বললে তিনি বলেন ত্রিপুরার মানুষ তো বোকা। আসলে তারা বোকা। আসলে তারা ভাবছে নদী পার করে মাঝি কে গালাগাল দিয়ে বেশিদিন চলবে। কিন্তু এভাবে বেশিদিন চলতে পারেনা। আরো বলেন রাজ্যে বাঙালি এবং উপজাতিদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে একটি চক্রান্ত চলছে। এবং তারা বলছে গ্রেটার তিপরাল্যান্ড। কিন্তু তিপরাল্যান্ড রক্ষা করা যাচ্ছে না, আর তাদের গ্রেটার তিপরাল্যান্ড কে দেবে ? তারা তো এ ডি সি চালাতে পারছেন না। গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের মূল গোপন স্লোগানটা হলো বাঙালি আলাদা, উপজাতি আলাদা বলে জানান তিনি। পুঁজিবাদীদের কথা বলতে গিয়ে যদি জিভ কাপলে তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না। তাই যুব আন্দোলন বৃত্তাকার থেকে বের করে লড়াই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

কাজ নেই, ঘর নেই, খাবার নেই। মানুষ বাজারে কি করতে যাবে। মানুষের গাড়ি ভাড়া কোথায়। ফলে ক্রয় ক্ষমতা এসে তলানীতে দাঁড়িয়েছে। এর পেছনে মূলত একটাই কারণ নীতি। তাই নীতির পরিবর্তন করতে হবে। নাহলে বেকার ছেলে মেয়ের কাজ কিভাবে হবে। এই জায়গায় একটা প্রচণ্ড রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাই দাবি তোলা হচ্ছে মানুষের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন লড়াইয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাজেটের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ক্যাপিটাল সেক্টর। অর্থাৎ ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নত করতে যত বেশি কাজ হবে তত মানুষের হাতে অর্থ আসবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কেপিটেল সেক্টরে খরচ দিনদিন কমিয়ে দিচ্ছে বিজেপি সরকার।

সরকার জনগনের দায়িত্ব নিচ্ছে না। সুতরাং কেপিটেল সেক্টরে সরকার যত অর্থ বৃদ্ধি করবে ততবেশি বাজেরে অর্থ ব্যয় হবে। মানুষের কাছে পয়সা আসবে। কিন্তু সরকার এইগুলো কিছুই করছে না। শুধু সরকারকে পুঁজিবাদীদের জন্য কাজ করে চলেছে। বিজেপির মূল বৈশিষ্ট্য হলো শোষণ। তাই সরকারটাকে পুঁজিবাদী সরকার বলা হচ্ছে। তাই এইগুলি পরিবর্তন করতে লড়াই করতে হবে। দাবি জানাতে হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য বেসরকারিকরণ করা যাবে না, চাকরি ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি করা যাবে না। সরকারি চাকরির মত বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও সংরক্ষন থাকতে হবে। কারণ বাজারে দ্রব্যমূল্য সবার জন্য সমান। কৃষক এবং শ্রমিক আন্দোলনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। পাশে দাঁড়িয়ে যুবদের প্রতিবাদ করতে হবে। কৃষক এবং শ্রমিকদের আন্দোলনের দাবি আদায়ে যুব আন্দোলনের দাবিতে এসে পৌঁছায়।

 উদাহরণস্বরূপ কৃষক আন্দোলন। কৃষক আন্দোলনে দেখা গেছে কৃষকদের ছেলেমেয়েরা বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে জানান তিনি। ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের কোন মিল নেই। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। কোন ব্যক্তির চাইলে ধর্ম আচরণ করতে পারে, আবার নাও করতে পারে। ধর্মাচরণ না করলে নাগরিকত্ব পাবে না এটা দেশের সংবিধানের কোথাও নেই। ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের এবং রাজনৈতিক দলের কোনো সম্পর্ক নেই। নতুন করে বিজেপি ফ্যাসিস্টরা তা অন্তর্ভুক্ত করেছে। লক্ষ্য সংখ্যালঘু মুসলিম অংশের মানুষ। তাহলে প্রশ্ন দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের পেছনে কি মুসলিম অংশের মানুষের কোন ভূমিকা ছিল না? কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা আর গণতন্ত্র হাত ধরাধরি করে চলে। সুতরাং গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু সরকার এটি আলাদা করতে চাইছে। তাই ধর্মনিরপেক্ষতা কথা বলে মানুষকে যে আলাদা করতে চাইছে তা থেকে বের করে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা যাবে না। তাই শুধু চাকরির দৃষ্টি নিয়ে লড়াই করলে চলবে না বলে জানান তিনি। ডিওয়াইএফআই সভাপতি পলাশ ভৌমিক পতাকা উত্তোলন করে টাউনহলে সম্মেলনের সূচনা করেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্টের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য