স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২৮ মার্চ : ১৯৫১ সালে ত্রিপুরার মানুষ বিকল্প পথ দেখেছিল। তখন ত্রিপুরার মানুষের লজ্জা নিবারণের কাপড় ছিল না, গোটা রাজ্যে ছিল অভাব অনটন। ১৯৫২ সালের লোকায়িত অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে পার্লামেন্টে গিয়ে দশরথ দেববর্মা দাবি করেছিলেন আমি দশরথ দেববর্মা। পুলিশের আমাকে ধরার চেষ্টা করছে। আমি জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে ত্রিপুরা থেকে পালিয়ে পার্লামেন্টে এসেছি। জহরলাল নেহেরু এই কথা শুনে দশরথ দেববর্মার উপর থেকে সমস্ত মামলা তুলে নেন। তারপর তাকে শপথ গ্রহণ করিয়ে স্বীকৃতি দেন জহরলাল নেহেরু।
এই ইতিহাস কত জন জানে? এবং রাজন্য শাসনের কি ভূমিকা ছিল? তাদের অত্যাচারী চেহারা ছিল। আগরতলা রাজবাড়ীর ইট পাথরের মধ্যে শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের রক্ত এখনো পাওয়া যাবে। তারা মানুষকে দিয়ে কাজ করিয়ে মজুরি দেয়নি। এখন আবার তারা উপজাতি ও অনুপজাতির মধ্যে বিরোধ বাধানোর চেষ্টা করছে। তাদের অতীত জনগণ ও জনজাতিদের স্বার্থের অতীত নয়। এখন তারা উপজাতিদের বন্ধু সাজার চেষ্টা করছে নতুন নাম দিয়ে। তাই পুরনো ইতিহাসকে বাদ দিলে বর্তমান পরিস্থিতিকে মূল্যায়ন করা কঠিন হবে। তাই ইতিহাসকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে বামফ্রন্টকে। বীরাঙ্গনা কুমারী, মধুতী, রূপশ্রী দেববর্মার শহীদান দিবসে শপথ নিতে হবে অতীত ইতিহাস যাতে নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছানো যায়। শুক্রবার আগরতলা টাউন হলে বীরাঙ্গনা কুমারী, মধুতী, রূপশ্রী দেববর্মার শহীদান দিবসে বক্তব্য রেখে এই কথা বললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। সভা শুরু হওয়ার আগে কুমারী মধুতী রুপশ্রী দেববর্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী, সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির নেত্রী রমা দাস সহ অন্যান্যরা।
হলসভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রেখে বলেন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সমস্যায় মানুষ জর্জরিত। এগুলির থেকে বিজেপি এবং তিপরা মথার সরকার নজর দেয় না। তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে কোন সহযোগিতা করা চলবে না। এ ধরনের চিন্তা ভাবনা নিয়ে যারা রাষ্ট্র এবং রাজ্য পরিচালনার চেষ্টা করে যেতে পারে না। তাদের জনগণ তাদের ছুঁড়ে ফেলে দেয়। মানিক সরকার এদিন রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন যারা শোষিত মানুষের কথা চিন্তা করে তাদের সরকারে প্রতিষ্ঠিত করে জনগন। এর দৃষ্টান্ত বিভিন্ন দেশে ও রাজ্য রয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাজ্যে যে সরকারটা চলছে তারা ভীত, সন্ত্রস্ত এবং বিচ্ছিন্নতায় ভুগছে। ২০২৩ সালের ফলাফল বিরোধী দল সিপিআইএম থেকে শাসক দল বেশি ভালো জানে। তাই বাইরের লড়াইটাকে বিধানসভার ভেতরে নিয়ে সোচ্চার হতে না পারে তার জন্য সিপিআইএমের বিধায়কদের কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে। এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। এগুলি শক্তির লক্ষণ নয়। কিন্তু আক্রমণ আসবে জনগণের কাছে যেতে হবে। রাজধানীর জয়নগর এলাকায় নেতাদের যেভাবে মাথা ফাটিয়েছে সেটা অত্যন্ত নিন্দা জনক। কিন্তু সেখানেই আবার বড় করে এবার সভা সংগঠিত করা হবে। কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন বর্তমান দায়িত্ব অবহেলা করলে অপরাধ হবে, ২০২৮ সাল বিধানসভা নির্বাচনের কথা ছেড়ে দিয়ে বর্তমান দায়িত্ব পালন করুন। কেউ যাতে অভিযুক্ত করতে না পারে তার জন্য বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে লড়াই করার জন্য শপথ গ্রহণ করতে আহ্বান জানান তিনি। এদিন হল সভায় সিপিআইএমের কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল বেশ লক্ষণীয়।