স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২৮ মার্চ : জমি মাফিয়া নিয়ে গুরুতর অভিযোগ বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের। বিধানসভায় বসে সরাসরি এই অভিযোগ তুলে বললেন জমির মাফিয়াদের প্রশ্রয় দিতে জেলা শাসককে বদলি করে দেওয়া হয়েছিল। এই গুমোর ফাঁস করলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে ডেকে তিনি জানান, ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এডিশনাল সেক্রেটারিকে চিঠি লিখেছিলেন বর্তমান পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার। তিনি সেই সময় সিপাহিজলা জেলার জেলাশাসক ছিলেন।
চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন সিপাহীজলা জেলার ১৪০০ কানি জমি নিয়ে চলছে প্রতারণা, যার মূল্য ৫০০ কোটি টাকার অধিক। বিশেষ করে জমিগুলি কোন তথ্য ছাড়াই স্থানান্তর করা হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের নামে জমি হস্তান্তর করা হচ্ছে তারা জমির প্রকৃত মালিকদের পরিচিত নয়। তিনি আরো লিখেছেন বহু খাস জমি, জোত জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। খাস জমি বরাদ্দকৃত জমি হিসেবে দেখানো হয় এবং তারপর অনুমতি ছাড়াই বরাদ্দকৃত জমি জোত জমিতে রূপান্তর করা হচ্ছে। তিনি এই বিষয় গুলো উল্লেখ করে চিঠি দেওয়ার পর ১২ ই অক্টোবর তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়। জেলাশাসক এই চিঠি লিখেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অথচ এ বিষয়গুলি নিয়ে এখন ত্রিপুরা বিধানসভা অধিবেশনে কথা বলা যাচ্ছে না। মাইক বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তারপর জুড়ে কথা বললে আবার বলছে চিৎকার করে নাকি কথা বলছি। তিনি বলেন বর্তমান রাজ্যের অবস্থাটা অত্যন্ত ভয়াবহ। কেউ যদি জমি ফেলে রেখে কর্মস্থলে যায় সেখান থেকে কয়েক বছর পর এসে দেখবে জমি বিক্রি হয়ে গেছে।
সারা রাজ্যে প্রায় ৮ – ১০ হাজার কোটি টাকার প্রতারণা চলছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর রাগ কেন তিনি চিঠি লিখেছেন। তাই জেলা শাসককে সিপাহীজেলা থেকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায়। কিন্তু জেলা শাসকের এই চিঠি দীর্ঘদিন হয়ে গেছে বলে আর কোন দিন এর চিঠি বের হয়ে আসবে না বলে ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এখন যখন বিধানসভায় চিঠিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় তখন চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছে শাসক দলের বিধায়ক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন আরো বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সাহস থাকলে এ বিষয়ে সিবিআই তদন্ত দেওয়ার জন্য। যদি না দেয় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে টানলে কি অপরাধ হয়ে যাবে? সুতরাং দুর্বলতা না থাকলে সিবিআই দেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী এবং এই সরকার সব সময় দাবি করে তারা স্বচ্ছতার নিরিখে প্রশাসন পরিচালনা করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কথার সাথে কাজের মিল নেই। জেলা শাসক এই চিঠিতে কোন মন্ত্রী, বিধায়ক ও রাজনৈতিক দলের উল্লেখ করেননি। তাই দপ্তরের আমলার চিঠি অনুযায়ী সি বি আই তদন্ত করা হোক। আর তদন্ত না হলে বোঝা যাবে ডালের মধ্যে কোন কিছু কালো আছে। সুদীপ রায় বর্মন আরো বলেন, এই দুর্নীতি শুধু মাত্র ২০২৩ -এ সীমাবদ্ধ নেই। বরং ব্যাপকতা লাভ করেছে। অথচ এই সরকার নির্লজ্জ, কালিমা লিপ্ত এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। তাই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলতে হয় সব কমিশন খোরের মেলা চলছে। সবকিছুতেই এই কমিশন খোররা থাবা বসাচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার কাছে চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হলে তিনি অস্বস্ত করেছেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।