স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২০ মার্চ : পিতার আর্থিক অভাব অনটনের কারণে চিকিৎসা করতে পারছে না স্বামীর পরিত্যক্ত নাবালিকা গৃহবধূ। এক বছর আগে স্বামী বিকাশ আচার্য তার শরীরের আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বসে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিকিৎসার দাবি করেন এবং অভিযুক্ত স্বামীর কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।নাবালিকা গৃহবধূ জানান, তার বয়স ১৭ বছর। ঘটনা গত এক বছর আগে। নাবালিকা গৃহবধূর অভিযোগ আড়াই বছর আগে আগরতলা পূর্ব থানার অন্তর্গত প্রতাপগড় নিউ জুয়েল ক্লাব সংলগ্ন এলাকার নাবালিকা কল্যাণপুর থানার অন্তর্গত দাওছড়া এলাকার নন্দ দুলাল দেবনাথের ছেলে বিকাশ দেবনাথের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের কিছুদিন ভালো কাটলেও তারপর থেকে ওই নাবালিকা গৃহবধুর উপর তার স্বামী বিকাশ দেবনাথ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এর মধ্যে তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
কন্যা সন্তান জন্মের পর নাবালিকা গৃহবধুর উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। একদিন রাতের বেলা অভিযুক্ত স্বামী গৃহবধুর সাথে ঝগড়া করে। পরের দিন সকালবেলা গৃহবধু যখন রান্না করছিলেন তখন তার উপর কেরোসিন দিলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পরে তার চিৎকার শুনে আশেপাশে লোকজনেরা এসে হাসপাতাল নিয়ে যায়। গুরুতর আহত হওয়ার পরও গৃহবধূর ছোট্ট কন্যা সন্তানটিকে পর্যন্ত প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আছে নাবালিকা গৃহবধূর মা বাবা। হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসা করানোর পর অর্থের অভাবে আর চিকিৎসা করাতে না পেরে নাবালিকা গৃহবধূর মা-বাবা তাকে তার বাপের বাড়িতে নিয়ে আসে।
কিন্তু অর্থের অভাবে এই নাবালিকা গৃহবধূটি তার বাবার বাড়িতে এখনো অসুস্থ অবস্থায় আছে। গত রবিবার দুপুরে নাবালিকা গৃহবধূর বাবা অভিযুক্ত বিকাশ দেবনাথের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ এনে আগরতলা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে মামলা দায়ের করে এবং এই মামলার প্রতিনিধি জেলার পুলিশ সুপার সহ রাজ্য পুলিশের আইজিপি -র কাছেও পাঠানো হয়। তারপর বৃহস্পতিবার গৃহবধূ তার সন্তান এবং মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে এসে রাস্তায় বসেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গৃহবধূর দাবি তার চেয়ে যেন সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসার সহযোগিতা করেন। কারণ তার দেড় বছরে একটি সন্তান রয়েছে। তার যদি কিছু হয় তাহলে শেষ হতে মা হারাবে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির সামনে ছুটে আসেন পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ। তারা নাবালিকা গৃহবধূর বক্তব্য শুনে একটি টমটম রিজার্ভ করে হাসপাতাল পাঠানোর বন্দোবস্ত করেন। তাদের আশ্বস্ত করেন এ বিষয়ে উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের আনা হবে। যাতে মেয়েটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহযোগিতা পায়। কিন্তু প্রশ্ন হল গত রবিবার সংবাদ মাধ্যমে এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত রাজ্যের মহিলা কমিশন এবং শিশু সুরক্ষা কমিশন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিভিন্ন মহিলা সংগঠন মেয়েটির পাশে দাঁড়ায়নি। কুম্ভ নিদ্রায় আচ্ছন্ন আছে এ সংগঠনগুলি। বিভিন্ন সময় এই সংগঠনগুলি কিছু নেতৃত্ব সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত হন, অথচ নারীদের দুঃসময়ে তাদের পাশে দেখা যায় না। এমনটাই গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে বৃহস্পতিবার।