স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ২৭ ফেব্রুয়ারি : পনের জন্য স্বামী ও শাশুড়ি মিলে গৃহবধূকে অগ্নিদগ্ধ করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূর বাবা শান্তি নমঃ। মৃত গৃহবধুর নাম তানিয়া নমঃ, বয়স ২৫ এবং অভিযুক্ত স্বামীর নাম কৃষ্ণ দেবনাথ, বয়স ৩৫। বাড়ি রাজধানীর বাইপাস সংলগ্ন শ্যামাপ্রসাদ এলাকায়। গৃহবধূ বাবা সহ সি পি আই এম এল -এর একটি প্রতিনিধি দল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। গৃহবধূর বাবা শান্তি নমঃ জানান, দীর্ঘ চার বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই সংসার জীবনে সুখের মুখ দেখতে পাননি তার মেয়ে। স্বামী মদমত্ত অবস্থায় প্রতিদিন বাড়িতে ফিরে বাবার কাছ থেকে বাইক, মোটা অর্থ আনার জন্য তানিয়াকে মারধোর করতো।
অভিযুক্ত স্বামীকে সঙ্গ দিত তানিয়ার শাশুড়ি। বিভিন্ন সময় তানিয়াকে মারধর করে হাত পা অচল করে দিয়েছিল। এ নিয়ে শ্রীনগর থানায় একবার মামলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ গৃহবধূর স্বামী এবং শাশুড়ির পক্ষ হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে নেয়। ফলে পুলিশের প্রশ্রয়ে দিন দিন তানিয়াকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায় তার শাশুড়ি এবং স্বামী। গত শুক্রবার দুপুরবেলা তানিয়ার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় তার স্বামী এবং শাশুড়ি। তারপর রাত নয়টার সময় হাসপাতাল থেকে তানিয়ার বাপের বাড়ির লোকজনকে জানায় বলে অভিযোগ। বুধবার জিবি হাসপাতালের চিকিৎসকের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তানিয়া। তানিয়ার আড়াই বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। তানিয়ার বাপের বাড়ি মলয়নগরের এলাকায়। বাপের বাড়িতে তানিয়ার বাবা ছাড়া আর কেউ নেই। তাই বলে তানিয়াকে নির্যাতন করার আরো বেশি সুযোগ পেয়েছিল অভিযুক্ত স্বামী এবং শাশুড়ি। অভিযুক্ত স্বামী এবং শাশুড়ির ফাঁসির দাবি করলেন অসহায় তানিয়ার পিতা। এবং এদিন তানিয়ার পিতার পাশে দাঁড়ান সিপিআইএমএল -এর নেতৃত্ব। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি করলেন। এবং এ ধরনের ঘটনা রাজ্যের বুকে সংঘটিত হওয়ায় তীব্র নিন্দা জানান।
এখন দেখার বিষয় প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কতটা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, রাজ্যের মহিলা কমিশন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মহিলা সংগঠন বিভিন্ন সময় নারী নির্যাতন নিয়ে মাইক্রোফোন হাতে করে সুষ্ঠ সমাজের দাবি করে। অথচ শিক্ষিত সমাজে আজও পনের জন্য বলি হতে হয় নিরপরাধ গৃহবধূদের। এই সংগঠনগুলির নেতৃত্ব এবং মহিলা কমিশনের কোন কর্মকর্তাকে এ ধরনের ঘটনায় এগিয়ে এসে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে বাধ্য করতে দেখা যায় না। এভাবে আর কত গৃহবধুর প্রাণ ঝরে গেলে দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসবে নারী সংগঠন এবং মহিলা কমিশনের কর্মকর্তারা? এমনটাই প্রশ্ন আজ জনমনে। কারণ পনের জন্য বলি হওয়ার মতো ঘটনা খবরের শীর্ষস্থান দখল হতে আর দেখতে চায় না আমজনতা।