স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ৯ ফেব্রুয়ারি : সুশাসন জামানায় ভূলুন্ঠিত মাতৃ শক্তির ইজ্জত। কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে রাস্তায় নগ্ন করে পেটালো শাসক দলের রাষ্ট্রবাদী নেতা তথা বুথ সভাপতি অমল দাস এবং তার ভাই বলে অভিযোগ। পয়সার বিনিময়ে তাদের সহযোগিতা করেছে এলাকার কিছু মহিলা। আক্রান্ত কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী বর্তমানে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত বুথ সভাপতি রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৫ নং বুথ সভাপতি অমল দাস। তার নারী পাচার এবং বাংলাদেশী পাচার সহ নেশা কারবারির ঘটনা প্রকাশ্যে আনায় এই ঘটনা বলে দাবি ছাত্রীর পরিবারের। রাষ্ট্রপতি কালার্স প্রাপ্ত পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করলেও অভিযুক্তকে বাঁচাতে মাঠে নেমেছে খুদ থানার ওসি। এ বিষয়ে ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানায়, ২০১৯ সালে সিপিআইএম দল ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছে সমাজদ্রোহী অমল দাস। এলাকার বিধায়ক থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতৃত্বদের আশীর্বাদে সে বর্তমানে এলাকার বুথ সভাপতি। আর বুথ সভাপতি হওয়ার পর থেকে এলাকায় শুরু করেছে তার আসল রূপ দেখানো। নারী পাচার, বাংলাদেশী পাচার, জমির দালাল ও ড্রাগস মাফিয়া সহ সমস্ত ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে অভিযুক্ত অমল।
দিনরাত ২৪ ঘন্টা পিস্তল নিয়ে এলাকায় তান্ডব চাল্লাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো মুখ খোলার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছে না। গত একমাস আগে এলাকার নিরীহ এক মহিলাকে ভিটে মাটি হারা করেছে। পশ্চিম আগরতলা থানার দ্বারস্থ হলেও মহিলা বিচার মিলে না, এবার এলাকার এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে নগ্ন করে অভিযুক্ত অমল এবং তার সঙ্গী সাথীরা মারধর করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর দুইটার নাগাদ অমল দাস কুমতলব নিয়ে বাড়ির লোকজনদের অনুপস্থিতিতে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর ঘরে প্রবেশ করে। তখন ছাত্রী বিষয়টি বুঝতে পেরে তার সাথে জোরজবরদস্তি করে পালাতে চায়। এবং অভিযুক্তকে জানায় এ বিষয়ে তার মা-বাবাকে জানাবে। তখন ছাত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাড়ি থেকে টেনে এনে রাস্তায় বেধড়ক মারধর শুরু করে অমল এবং তার ভাই। ছাত্রীর চিৎকার শুনে ছুটে আসে আশেপাশের আকলিমা আক্তার, আনোয়ার হোসেন, জাহান্না জানির, মৌসুমী এবং পিয়ালী সহ কিছু পুরুষ মহিলা।
তারাও অমলের পক্ষ নিয়ে ছাত্রীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। তারপর আশেপাশের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতাল পাঠায়। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত অমল দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় এ ধরনের ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদে সরব হতে চাইলে সে জানিয়ে দেয় পুলিশ নাকি তার কথায় উঠে বসে। এবং সেটাও অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। এলাকায় মহিলাদের পিস্তল উঁচিয়ে প্রাননাশের হুমকি দেওয়ার পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা রাখছে না। সূত্রের খবর আগেই পুলিশের কাছে ফোন করে অভিযুক্ত আমল জানিয়ে দেয় মামলা যাতে না রাখা হয়। তার এই ধরনের দুঃশাসনে শাসক দল কলঙ্কিত। কারণ এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে আছে। এটা সুশাসন বলে মেনে নিতে পারছে না এলাকার খোদ শাসক দলের কর্মীরা। দুঃশাসন যে কতটা ভয়াবহ রূপ হলে একজন ছাত্রীর সম্মান পর্যন্ত নেই সমাজে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুধু সুশাসনের গল্প শুনিয়ে চলেছে মন্ত্রী বাহাদুররা। বাস্তবে যে কতটা দুঃশাসন দলের কার্যকর্তারা সৃষ্টি করে রেখেছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এটাই এর প্রমাণ বলে মনে করছে স্থানীয়রা।