স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ৯ ফেব্রুয়ারি : প্রায় ১৫ বছর দিল্লিতে ক্ষমতায় ছিল আম আদমি পার্টি। তারা শুরু থেকেই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছিল। তারা গোটা দেশবাসীকে দেখেছিল মানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধান পুরোপুরি পূরণ করা না গেলেও, নাগরিক পরিষেবা প্রদান করে বহুদূর যাওয়া যায়। যেমন বিদ্যুৎ বিল, পানীয় জলের বিল মুকুব করে দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা, পাশাপাশি বহু ক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির চাপের মধ্যে পড়েও নাগরিক পরিষেবাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেছিল আম আদমি পার্টি। এবং সরকার পরিচালনার সময় প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে দিল্লির আম আদমি সরকারকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। শুধু তাই নয় মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জেলে পর্যন্ত পাঠিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তারপরেও আম আদমি পার্টি জনগণের স্বার্থে কাজ করেছিল। তারপরও এই ফলাফল কেন হল তা নিয়ে বিরোধীদের ভাবতে হবে। এবং গত লোকসভা নির্বাচনের মত যদি ইন্ডিয়া জোট হয়ে লড়াই হতো দিল্লিতে তাহলে প্রায় ১৪ টি আসনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বীরা জয়ী হতে পারত না। এটাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি ত্রিপুরা রাজ্যের ভারতীয় জনতা পার্টির সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, এই রাজ্যে রয়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রী দয়া, দূরদৃশ্যতা! আর এই গুলি করেই তাদের কাটাতে হবে।
বিজেপি -র নিজস্বতা বলতে কোন কিছুই নেই। কারণ যতদিন যাচ্ছে মানুষ বুঝতে পারছে ত্রিপুরা রাজ্যে চলছে একটা কমিশনের সরকার। কমিশন ছাড়া এই রাজ্যে কোন কাজ হয় না। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে মহাকরণ পর্যন্ত শুধু দুর্নীতি চলছে। আর এই কমিশন বাণিজ্য নিয়ে এখন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যেমন ধর্মনগরে ভারতীয় জনতা পার্টির বিধায়ক তথা ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন এবং তার বিরোধীদের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে তাতে গোটা ধর্মনগর বাসী আতঙ্কিত। একই অবস্থা বিশালগড়, সোনামুড়া এবং আগরতলা শহরের আনাচে কোনচে আছে। আর এইগুলি ঢাকতে গত কয়েকদিন আগে ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যদের অভিযান চালিয়ে দাবি করেছে তারা নাকি বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক এবং রাষ্ট্রবাদী দল তারা।
এবং এ রাষ্ট্রবাদী দলের মন্ডল সভাপতি নির্বাচন নাকি বাইরে থেকে আনা রিটার্নিং অফিসার দিয়ে হবে বলে শোনা গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় প্যারাসুট দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে নবনির্বাচিত মন্ডল সভাপতি। অর্থাৎ দেখা গেছে এই জনতা পার্টি হয়ে গেছে কমিশন খুর, মুনাফা খোর এবং সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতাবানদের। সুতরাং যাদের হাতে যত টাকা তারাই সমস্ত ক্ষমতার মালিক। আর এগুলি বেশিদিন থাকবে না। তিনি আরো বলেন সম্প্রতি প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বাজেটে খাদ্য সরবরাহ, যুবকদের কর্মসংস্থান, কৃষকদের জন্য বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও আগরতলা শহরে অভিনন্দন মিছিল সংগঠিত করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আবার দিল্লির সহ কোন রাজ্যে তারা জয়ী হলে ত্রিপুরা রাজ্যে রেগা এবং টুয়েপের পয়সা দিয়ে তাদের লোক জমাতে হয়। তারপরও তাদের জবরদস্তি করে লোক আনতে হয়। এর মানে মানুষকে বেকুব বানিয়ে দিল্লির নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী এবং রতন বাবুদের কীর্তন করতে হচ্ছে। অথচ এগুলি মানুষ কতদিন মেনে চলবে? তাই সঠিক সময়ে মানুষ সঠিক জবাব দেবে বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন বিরোধী দলনেতা।