স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ২০ জানুয়ারি : স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলো বিচারক। কৈলাসহর আদালতের সরকারি আইনজীবী সুনির্মিল দেব জানান, কৈলাসহরের ইরানী থানার অন্তর্ভুক্ত খাওরাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ৩৫ বছরের রমিজ আলী ২০১৯ সালের মে মাসে কৈলাসহরের ধলিয়াকান্দি গ্রামের রোশনা বেগমকে বিয়ে করেছিল। বিয়ের পর থেকেই রোশনা বেগমকে পনের জন্য শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো রমিজ। বিয়ের নয় মাসের মাথায় ২০২০ সালের ছয় জানুয়ারি রাতে রমিজ আলী তার খাওরাবিল গ্রামের নিজ বাড়িতেই ধারালো কোদাল দিয়ে রোশনা বেগমের মাথায় আঘাত করে এবং ঘটনাস্থলেই রোশনা বেগম মারা যায়।
পরেরদিন রমিজ আলী আলী তার স্ত্রী রোশনা বেগমের মা নেশারুন বিবিকে খবর দেয়। খবর পেয়ে নেশারুন বিবি রমিজ আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখে ঘরের ভিতরে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় রোশনা বেগমের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। সাথে সাথেই নেশারুন বিবি ইরানি থানায় খবর দেয় এবং খবর পেয়েই ইরানি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রোশনা বেগমের মৃতদেহ ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০২০সালের সাত জানুয়ারি নেশারুন বিবি ইরানি থানায় রমিজ আলী এবং রমিজ আলীর এক নিকট আত্মীয়ের বিরুদ্ধে ইরানি থানায় মামলা করেছিল। ইরানি থানার পুলিশ সাথে সাথেই মামলাটি রেজিষ্ট্রি করেছিলো। ঘটনার পর রমিজ আলী তার নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেও ঘটনার তিন দিন পর মামলার তদন্তকারী অফিসার অপর্ণা দেবনাথ রমিজ আলীকে গ্রেফতার করেছিলো। তদন্তকারী অফিসার অপর্ণা দেবনাথ ২০২০ সালের ৩১ মে মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছিলো। আদালতে মামলা চলাকালীন রমিজ আলীর পক্ষে দুইজন সাক্ষ্যদান করলেও রমিজ আলীর বিরুদ্ধে বাইশ জন সাক্ষ্যদান করে। দীর্ঘদিন আদালতে মামলা চলার পর ঊনকোটি জেলা আদালতের বিচারক সুদীপ্তা চৌধুরী চলতি মাসের আঠারো জানুয়ারি রমিজ আলীকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং কুড়ি জানুয়ারি সাজা ঘোষণা করেন। বিচারক 498A ধারা মূলে রমিজ আলীকে তিন বছরের জেল হাজত, পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে নয় মাসের জেল হাজত দেয়। তাছাড়া, 302ipc ধারা মূলে রমিজ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে নয় মাসের জেল হাজত ঘোষণা করে বলে আইনজীবী সুনির্মিল দেব জানান।