স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ১৭ জানুয়ারি : ১৯৭৯ সালে ১৭ই জানুয়ারী বিশ্রামগঞ্জে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় আমরা বাঙালি দলের কর্মী নিতাই শীলের। আজ তার প্রয়াণ দিবস। আমরা বাঙালি রাজ্য কার্যালয়ে নিতাই শীলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আমরা বাঙালি দলের রাজ্য সম্পাদক গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল জানান, নিতাই শীলের হত্যাকারীর উপযুক্ত শাস্তি ও ৮০ জুনের গণহত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত সহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তা দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য।
এদিন একই সাথে সুর চড়িয়েছেন মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন ভাতা একলাফে দ্বিগুণ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, চলতি বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে ত্রিপুরার মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন ভাতা পূর্বের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন বৃদ্ধি করে সর্বসম্মতিক্রমে বিল পাশ করা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে এ রাজ্যে প্রথম বারের মতো বিজেপি ক্ষমতায় এসে পরের বছরেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন-ভাতা ১০০ শতাংশ তথা দ্বিগুন বৃদ্ধি করেছিল। বর্তমানে আবার বেতন-ভাতার বিল পাশের পর তা কার্যকরী হলে সেটা বেড়ে আগের তুলনায় প্রায় চারগুন তথা মন্ত্রী, বিধায়কদের ১ লক্ষ টাকার মতো হবে। সেই সঙ্গে মন্ত্রী, বিধায়কদের প্রাপ্ত বিভিন্ন এলাউন্সের বিষয়গুলি যোগ করলে বেতন-ভাতা মিলিয়ে তা প্রায় ১ লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকার মতো হবে। অথচ বিজেপি শাসনের এই ছয় বছরে কর্মসংস্থানের অভাবে ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির ফলে রাজ্যের বেকার, শ্রমজীবি থেকে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা এখন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ রাজ্যের বিজেপি সরকারের বেকার-শ্রমজীবিদের বেঁচে থাকার মৌলিক দাবিগুলি উপেক্ষা করে শুধু মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
কারণ, রাজ্যে ২০১৮ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে মিসকলে চাকরি, বছরে ৫০ হাজার চাকরি, অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণ, চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকের সমস্যার সমাধান, রেগায় শ্রমদিবস বাড়িয়ে ২০০ দিন করা, রেগার বর্তমান মজুরি বাড়িয়ে ৩৪০ টাকা করা, রোজভ্যালীর মতো চিটফান্ডের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা সহ ১৯৯ টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যার সামান্য অংশও গত ৬ বছরে তারা কার্যকর করতে পারেনি। এ অবস্থায় বেকার শ্রমজীবি সহ রাজ্যের বৃহত্তম অংশের জনগণের বেঁচে থাকার ব্যবস্থা না করে মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা বাঙালি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি মন্ত্রী, বিধায়কদের সম্প্রতি ঘোষিত অযৌক্তিক বেতন-ভাতা বৃদ্ধির তীব্র বিরোধীতা করে। আমরা বাঙালি দাবি সরকার তার প্রতিশ্রুতি পালন করার জন্য যাতে কাজ করে।