Tuesday, February 11, 2025
বাড়িরাজ্যতীর্থমুখে শুরু হল ঐতিহ্যবাহী তীর্থমুখের পৌষ সংক্রান্তি মেলা।

তীর্থমুখে শুরু হল ঐতিহ্যবাহী তীর্থমুখের পৌষ সংক্রান্তি মেলা।

স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ১৪ জানুয়ারি : গোমতী নদীর উৎসস্থল তীর্থমুখে অবগাহনের মধ্য দিয়ে শুরু হল ঐতিহ্যবাহী তীর্থমুখের পৌষ সংক্রান্তি মেলা। চলবে বুধবার সকাল পর্যন্ত। সোমবার রাত আটটার নাগাদ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেব্বর্মা। উপস্থিত ছিলেন সমবায় মন্ত্রী শুক্লা চরন নোয়াতিয়া।

 দুই মন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সঞ্জয় মানিক ত্রিপুরা, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিস দাস, গোমতীর জেলা শাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, জেলা পুলিশ সুপার নমিত পাঠক, করবুক মহকুমা শাসক শ্যামজয় জমাতিয়া প্রমুখ। মকর সংক্রান্তির কনকনে শীত কে উপেক্ষা করেই হাজার হাজার পূর্নার্থী গোমতীর উৎসস্থলে ভিড় জমিয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই গঙ্গা পূজা ও অবগাহন শুরু হয়ে যায়। মাথা মুন্ডন করে পিতৃপুরুষের পিন্ড দান, অস্থি বিসর্জন, তর্পণ ও পূর্ণ্যস্নান করছে জাতি জনজাতি সকল অংশের হিন্দু সনাতনীরা।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন করবুক ব্লকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রণব ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে মন্ত্রী বিকাশ দেব্বর্মা বলেন, বর্তমান সরকার জনতাতিদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। জনজাতিদের ভাবাবেগের সাথে জড়িত এ তীর্থমুখের পূর্ণ্য স্থানকে উন্নত করার জন্য রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই অর্থ মঞ্জুরী দিয়ে দিয়েছে। তীর্থমুখের সবচেয়ে বড় সমস্যা নেটওয়ার্কের সমস্যা।

মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন ২০২৬ সালের তীর্থমুখ মেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টি আর পি এন্ড পি টিজি, সমবায়, সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন, তীর্থমুখের পৌষসংক্রান্তি মেলা রাজ্যের মানুষের সম্পীতির এক উজ্জল নিদর্শন৷ তীর্থমুখ মেলা আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ৷ নতুন সরকার আসার পর এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য স্থায়ী ভাবে তৈরী করা হয়েছে৷  তিনি বলেন, ত্রিপুরীদের কাছে এই উৎসব পৌষ হাংঙ্গরাই নামে খ্যাত৷ তাছাড়া ভারতের অন্যান্য জায়গায়ও বিভিন্ন নামে এই উৎসব পালন করা হয়৷ তীর্থ মুখের মেলাটি বহু প্রাচীন এবং রাজ্যের অন্যতম বড় মেলার মধ্যে একটি। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে মেলা প্রাঙ্গণে হাজার হাজার যাত্রী এবং জনজাতি অংশের মানুষের সমাগম হয়। বহু লোক এখানে তাদের পিতৃ পুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন এবং অনেকে অস্থি বিসর্জন করে শ্রাদ্ধশান্তিও করে থাকেন। তিনি আশাপ্রকাশ করেন আগামী বছর আরও ব্যাপক আকারে এই মেলার আয়োজন করা সম্ভব হবে৷  মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিএসএফ এবং ধলাই ও গোমতির জেলা প্রশাসনের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে সমন্বয় আগাম করা হচ্ছে। বিএসএফ ত্রিপুরা নানা উদ্যোগ নিয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বহুস্তরীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টিএসআর এবং ত্রিপুরা পুলিশের সাথে যৌথ টহল চালানো হচ্ছে।

গোমতী নদী ও ডুম্বুর হ্রদে অনুমোদিত চলাচল রোধে নদীর আধিপত্য চলছে। তীর্থ মুখের কাছাকাছি সীমান্তের বিভিন্ন প্যাচগুলিতে নাইট ভিশন ডিভাইস, ড্রোন এবং সিসিটিভি নিয়োগের মাধ্যমে সীমান্ত নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সঞ্জয় মানি ত্রিপুরা, বিধায়ক পাঠান লাল জমাতিয়া, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, গোমতি জেলার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক, করবুক আর ডি ব্লকের বিডিও প্রনব ত্রিপুরা। এদিকে, ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গোমতী জেলা প্রশাসন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে তীর্থমুখ মেলা প্রাঙ্গনে দু’দিনব্যাপী তীর্থমুখ পৌষ সংক্রান্তি মেলা শুরু হয়েছে৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ মেলায় ব্যবসায়ীগণ ২৫০টি স্টলে তাদের পসরা নিয়ে বসেছেন৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিশ্র সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। সারারাত জেগে অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য