Sunday, December 22, 2024
বাড়িরাজ্যলাল ভাইয়ের সরকার ভারতীয় নাগরিকের অধিকার পর্যন্ত দেয়নি ত্রিপুরার মানুষকে, শুধু ক্যাডারদের...

লাল ভাইয়ের সরকার ভারতীয় নাগরিকের অধিকার পর্যন্ত দেয়নি ত্রিপুরার মানুষকে, শুধু ক্যাডারদের সেবা করেছেন : অমিত শাহ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২২ ডিসেম্বর : কমিউনিস্ট সরকার দীর্ঘ ২৫ বছর শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের ক্যাডারদের জন্য কাজ করেছে। গরিবের সরকার বলে নিজেদের দাবি করলেও তারা মানুষের জন্য কাজ করেনি। কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ত্রিপুরাবাসী কাছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, ঘর, বিদ্যুৎ, শৌচালয়, রেশনের ব্যবস্থা করছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার। এটাকে বলে সুশাসন। রবিবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে সমবায় সম্মেলন ২০২৪ -এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে এমনটাই বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

 ত্রিপুরা সুন্দরীর চরণে প্রণাম বলে বক্তব্য শুরু করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহা। তিনি পূর্বতন সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন লাল ভাইয়ের সরকার ভারতীয় নাগরিকের অধিকার পর্যন্ত দেয়নি ত্রিপুরার মানুষকে। ২০১৭ সালে যখন রাজ্যে এসেছিলেন তখন ত্রিপুরায় মাত্র ২.৮৬ শতাংশ মানুষের কাছে পানীয় জলের ব্যবস্থা ছিল। বর্তমানে রাজ্যের ৮৭ শতাংশ মানুষের কাছে পানীয় জল পৌঁছেছে। ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের কাছে রান্নার গ্যাস, পাঁচ লাখ টাকার স্বাস্থ্য বীমা পৌঁছে দিয়েছে বর্তমান সরকার। একই সাথে রাজ্যের আয় বাড়ছে। ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের মধ্যে ভারত অর্থনৈতিক দিকে তৃতীয় স্থানে পৌছে যাবে। কিন্তু এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না এ সরকার। সরকারের লক্ষ্য শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য যাতে প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে যায়। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আরো বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে ব্রু রিয়াং শরণার্থীরা পশুর থেকেও খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন যাপন করছিল। বিজেপি সরকার তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে। কমিউনিস্ট ও কংগ্রেস দীর্ঘ বছর রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় ছিল।

কিন্তু তাদের নজর পড়েনি ব্রু রিয়াং শরণার্থীদের দুঃখ কষ্টের প্রতি। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর বিজেপি সরকার ব্রু রিয়াং শরণার্থীদের সমস্যার সমাধান করেছে। তাঁদের রোজগারের ব্যবস্থা করেছে। কংগ্রেস সরকারের সময় বহু প্রকল্প চালু করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় নি। বিজেপি সরকারের সময় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয় করে ১১ টি স্থানে ব্রু রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুরুতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বোতাম টিপে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে রয়েছে আগরতলায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেন্ট্রাল ডিকেটিভ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, ১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আমবাসায় মহকুমা শাসকের নতুন অফিস বিল্ডিং, ১৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গন্ডাতুইসায় মহকুমা হাসপাতাল, ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জিরানীয়ায় অ্যাপ্রোচ রোড-সহ ২ টি রেলওয়ে ওভারব্রিজ, ৪০ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে খোয়াইয়ের পদ্মবিল হরডি ব্লকের অধীন দেবেন্দ্র চৌধুরী পাড়া থেকে ছনখলা পর্যন্ত রাস্তা নিমণি, ১১ টি শহরে ৮৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট এসটিপি নির্মাণ এবং আগরতলায় ৩১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ কিমি প্রধান সড়কের উন্নতিকরণের। প্রকল্পগুলি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই আটটি প্রকল্প সরকারের কাজের গতি দেবে। তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরায় কোপারেটিভ ক্ষতির মুখে ফেলেছিল কমিউনিস্টরা। কিন্তু বর্তমানে এটি লাভের মুখ দেখেছে। কারণ ত্রিপুরার মানুষ একবার নয় দুবার নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে ত্রিপুরায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর জন্য ত্রিপুরাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করলেন তিনি। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বক্তব্য রেখে বলেন, ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালে রাজ্যের জিএসডিপি ৮.৭ শতাংশ হয়েছে। ২০১২ সালের থেকে বর্তমানে জিএসডিপি তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আগামী দিন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাথে প্রতিযোগিতা করে ত্রিপুরার জিএসডিপি আরো বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য সমবায়ের প্রতি মানুষকে আরও বেশি আকৃষ্ট করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও এগিয়ে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। স্বাধীনতার পর প্রথমবার সমবায় কমিটি গঠন হয়েছে। দুগ্ধ ও মৎস্য ক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে আরো বেশি স্বনির্ভর হতে হবে। তাহলে গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আরো বেশি শক্তিশালী হবে। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানের আরো বলেন, সমবায় নিয়ে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করে চলেছে। রাজ্যের সবগুলি সমবায় কে জাতীয় সমবায়ের ডাটায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাল্টি স্টেট কোঅপারেটিভ গঠনের চিন্তাভাবনা ও চলছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া সহ অন্যান্যরা। এদিনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাইক্রো এটিএম কার্ড এবং কৃষকদের হাতে বীজ তুলে দিয়েছেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য