স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ ডিসেম্বর : সুশাসন জামানায় রাজ্যে চিকিৎসক আক্রান্ত! দুষ্কৃতিকারীরা সরকারি হাসপাতালের প্রবেশ করে কর্তব্যরত চিকিৎসককে আক্রান্ত করেছে। ঘটনা কৈলাসহরের ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে। আক্রান্ত চিকিৎসক কৈলাসহর থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
এই ঘটনায় চিকিৎসক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। কৈলাসহরের ভগবান নগর এলাকায় অবস্থিত ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের আক্রান্ত চিকিৎসক ধ্রুপদ দাস শুক্রবার দুপুরে সংবাদ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানান, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক দুর্ঘটনাগ্রস্থ রোগীর চিকিৎসা করানোর সময় শ্যামল দাসের নেতৃত্বে তিনজন যুবক ইমারজেন্সি বিভাগের ভিতরে ঢুকে। সেইসময় তিনজনের মধ্যে থাকা রঞ্জিত দাস নামে এক যুবককে চিকিৎসক ধ্রুপদ দাস বলেন যে, আপনারা পাশের ড্রেসিং রুমে গিয়ে প্রথমে ড্রেসিং করিয়ে নিন। চিকিৎসক ধ্রুপদ দাসের এই কথা শোনার পর শ্যামল দাস উত্তেজিত হয়ে চিকিৎসককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং হুমকি দিতে থাকে। চিকিৎসক ধ্রুপদ দাস কিছু বুঝে উঠার আগেই শ্যামল দাস চিকিৎসকের গালে থাপ্পর দেয়। সেই সময় জরুরি বিভাগে কৈলাসহর থানার কয়েকজন পুলিশও ছিলেন। পুলিশ শ্যামল দাসকে আটকাতে গেলে পুলিশকে ধাক্কা দেয় যুবকরা।
সাথে সাথেই অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা সম্পুর্ন ঘটনা মোবাইল দিয়ে ভিডিও করেন। পরবর্তী সময় শ্যামল দাস সহ তিনজন জেলা হাসপাতাল থেকে চলে যায়। এবং শ্যামল দাসের নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের সি.সি টিভিতে রেকর্ড হয়ে রয়েছে বলে দাবি। হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডক্টর রোহন পাল, আক্রান্ত চিকিৎসক ধ্রুপদ দাস, জেলা হাসপাতালের ডক্টর প্রসেনজিত দাস, ডক্টর শুভ্র নিলয় দাস, ডক্টর ময়ূরী পাল সহ মোট পাঁচজন চিকিৎসক কৈলাসহর থানায় এসে শ্যামল দাস, সন্দীপ দাস এবং রঞ্জিত দাস এই তিনজনের নামে লিখিত মামলা করেছেন। চিকিৎসক আক্রান্তের ঘটনায় গোটা ত্রিপুরা রাজ্যের চিকিৎসক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইতিমধ্যেই আগরতলা থেকে অল ত্রিপুরা গর্ভমেন্ট ডক্টর এসোসিয়েশনের সভাপতি ডক্টর প্রদীপ দেববর্মা শুক্রবার দুপুরে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে এসে জেলা হাসপাতালের সকল চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক করেন। এবং বৈঠকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তাছাড়াও সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, পুলিশ যদি অবিলম্বে আক্রমণকারীদের গ্রেফতার না করে তাহলে চিকিৎসকরা আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, আক্রমণকারী শ্যামল দাস শাসক বিজেপি দলের প্রভাবশালী নেতৃত্ব। তাছাড়াও আক্রমণকারী শ্যামল দাস ঊনকোটি জেলা পরিষদের প্রাক্তন সহকারী সভাধিপতি এবং বর্তমান ঊনকোটি জেলা পরিষদের নির্বাচিত বিজেপি দলের সদস্য। আক্রমণকারী শ্যামল দাস আগে ৫২-চন্ডীপুর মন্ডলের বিজেপি দলের মন্ডল সভাপতিও ছিলেন। শ্যামল দাসের সাথে থাকা সন্দীপ দাস এবং রঞ্জিত দাসও শাসক বিজেপি দলের সক্রিয় সদস্য। আক্রমণকারী তিনজনই ৫২-চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা।