স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ নভেম্বর : ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর দেশের শ্রমিকরা শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দেয়। কারণ সে সময় তৎকালীন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার চারটি শ্রম কোড শ্রমিকদের বিরুদ্ধে চালু করার চেষ্টা করেছিল। একই সাথে তিনটি কালো কৃষি আইন সামনে এনেছিল সরকার। তারপর কৃষক ও শ্রমিকরা দিল্লি চলো অভিযানে শামিল হয়। আগামী ২৬ নভেম্বর চতুর্থ দিবস উপলক্ষে এবং সরকার প্রতিশ্রুতি পালন না করায় সারাদেশে চেতাগ্নি জমায়েত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্য এই কর্মসূচি বিভিন্ন মহকুমায় অনুষ্ঠিত হবে।
আগরতলায় রাজ্যের মূল কর্মসূচিটি হবে। শহরে একটি মিছিল সংগঠিত করে প্যারাডাইস চৌমুহনি এলাকায় সমাবেশ করা হবে। এই কর্মসূচি থেকে সরকারকে তিন মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হবে। নাহলে দেশের শ্রমিক কৃষকরা পুনরায় দেশব্যাপী আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। বৃহস্পতিবার কৃষক সবার রাজ্য কমিটির কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানান সংযুক্ত কিষান মোর্চার আহ্বায়ক পবিত্র কর। তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর সংযুক্ত কিষান মোর্চাকে দেওয়া লিখিত প্রতিশ্রুতি মোদী সরকার অমান্য করেছে।
শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর স্বার্থ বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এবং বিকল্প জনস্বার্থবাহী নীতির দাবিতে সংযুক্ত কিষান মোর্চা ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ যুক্ত ভাবে আগামী ২৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন ও সর্বভারতীয় শ্রমিক ধর্মঘটের চতুর্থ বার্ষিকীতে ভারতবর্ষের সমস্ত জেলায় ১২ দফা দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ সংগঠিত করবে। দাবিগুলি মূলত, সরকারী ক্রয়ের আইনি গ্যারান্টি সহ সমস্ত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সি২+৫০ শতাংশ করতে হবে। অবিলম্বে ৪ টি শ্রম কোড প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারী ক্ষেত্রে কোন ধরনের চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক নিয়োগ বা আউটসোসিং চলবে না। প্রতিমাসে ন্যূনতম মজুরী ২৬,০০০ হাজার টাকা ও পেনশন ১০,০০০ টাকা করতে হবে। সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক, প্রকল্প কর্মী চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক ও কৃষক ক্ষেতমজুরদের কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের ঋনগ্রস্ততা ও আত্মহত্যা রোধ করতে এককালীন সমস্ত সরকারী ও বেসরকারী ঋন মকুব করতে হবে। কম সুদে কৃষক ও শ্রমিকদের ঋন দিতে হবে।রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্র ও সরকারী ক্ষেত্র যেমন প্রতিরক্ষা, রেল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ইত্যাদির ক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই বেসরকারী করন চলবে না বলে জানান তিনি। আরো বলেন, সমাবেশ সংযুক্ত কিষান মোর্চা ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ দেশের শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর, নারী, ছাত্র, যুব, সাংস্কৃতিক কর্মী, প্রগতিশীল ব্যক্তিবর্গ ও প্রান্তিক অংশের জনগনকে ব্যাপক সংখ্যায় সামিল করার আহবান জানান তিনি।