স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৪ নভেম্বর : ত্রিপুরার বিধানসভার ৬০টি আসনের মধ্যে বর্তমানে জনজাতি সংরক্ষিত ২০ টি আসনের জায়গায় তিপ্রামথা দলের পক্ষ থেকে ২৫ টি আসন জনজাতি ও ১ টি আসন মনিপুরীদের জন্যে সংরক্ষণের দাবি করেন। কিন্তু ভারতবর্ষের সংবিধান অনুযায়ী লোকসভা, বিধানসভার মতো আইনসভাগুলি ছাড়াও চাকুরি সহ সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধাগুলি জনসংখ্যা অনুপাতেই সংরক্ষিত।
সে অনুযায়ী বর্তমানে ত্রিপুরার বিধানসভায় ৬০ টি আসনের মধ্যে এসটি সংরক্ষিত আসন হচ্ছে ২০ টি ও এসসি সংরক্ষিত আসন হচ্ছে ১০ টি। এখন বিধানসভায় ২০ টি এসটির জায়গায় ২৫ টি আসন এসটি ও ১ টি মনিপুরী মিলে ২৬ টি সংরক্ষিত করতে হলে সংবিধানের জনসংখ্যানুপাতে সংরক্ষনের মূল নিতিকেই বদলাতে হবে। তাই প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের এ ধরনের দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক বলে দাবি করে আমরা বাঙালি দল। বৃহস্পতিবার আমরা বাঙালি রাজ্য কার্যালয় সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই বলেন দলের সম্পাদক গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল। তিনি বলেন এ ধরনের অসাংবিধানিক দাবি উত্থাপন করে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ জনজাতি ভাবাবেগকে উস্কে দিয়ে ত্রিপুরার বৃহত্তম জনগোষ্ঠী বাঙালিদের উপর আবারও একটি ভয়ঙ্কর আঘাত আনার জন্যে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমরা বাঙালী দল উল্লেখিত দাবির তীব্র বিরোধী করা হচ্ছে।
মথার কথামতো গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লীতে কেন্দ্র-রাজ্য ও তিপ্রামথা মিলে যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল তাতেই নাকি ত্রিপুরার বিধানসভায় জনজাতি ও মনিপুরীদের জন্যে ২৬ টি আসন সংরক্ষণের কথা রয়েছে। যদি তা হয়ে থাকে ও তিপ্রামথার দাবি মোতাবেক কেন্দ্র সংবিধান ডিঙ্গিয়ে ত্রিপুরার বিধানসভায় জনজাতি ও মনিপুরীদের জন্যে ২৬ টি আসন সংরক্ষণের হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। আরো বলেন, অটোনমাস্ ডিস্ট্রিক কাউন্সিল সহ চাকুরি তথা সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তির যে সংস্থান রেখেছিলেন সেখানে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে ৬ষ্ঠ তপশীলের বিধান ছিল না। কিন্তু পরে দেখা গেল জনজাতি ভোটপ্রাপ্তি তথা ক্ষমতা লাভের আশায় কংগ্রেস, সিপিএম মিলে ১৯৮৫ সালের ১লা এপ্রিল সংবিধান সংশোধন করে ত্রিপুরাতে ৬ষ্ঠ তপশীল আইন চালু করে। তা করতে গিয়ে এখন দেখা যাচ্ছে ৬ষ্ঠ তপশীল আইন ত্রিপুরার উপজাতিদের কল্যাণ না করতে পারলেও সংখ্যাগুরু বাঙালিদের যে সর্বনাশ করেছে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার। তাছাড়া ৮০-র জুনের গণহত্যাও ৬ষ্ঠ তপশীল আইনেরই ফলশ্রুতি। ত্রিপুরাতে উপজাতিদের আরও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সালে হয় রাজীব-রাংখল চুক্তি। এর বিনিময়েই শাস্তির পরিবর্তে উগ্রপন্থীদের ঢালাও সরকারী সাহায্য ও রাজনৈতিক প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠা ছাড়াও বিধানসভায় ১৭টি আসনকে বাড়িয়ে ২০টি আসন এসটি রিজার্ভের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তারপরেও উপজাতিগণ সন্তুষ্ট নয়। এখন দাবী ‘গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডে’র, শ্লোগান ওঠছে ‘গো ব্যাক্ বাংলাদেশী’র। বর্তমানে শ্লোগান ওঠছে সংবিধান ডিঙ্গিয়ে বলে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
\