Wednesday, January 22, 2025
বাড়িরাজ্যকদমতলা পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্যের পরম্পরা বজায় রাখতে সব অংশের মানুষকে আহ্বান করলেন...

কদমতলা পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্যের পরম্পরা বজায় রাখতে সব অংশের মানুষকে আহ্বান করলেন মানিক সরকার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ নভেম্বর : ধর্ম যার যার, কিন্তু গ্রাম এবং এলাকা আপনাদের সবার, তাই শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখুন। এটাই রাজ্যের পরম্পরা ছিল। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর শুক্রবার কদমতলা পরিদর্শনে গিয়ে এই কথা বলেন পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। উল্লেখ্য, উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলায় গত ছয় অক্টোবর দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার একমাস দুদিন অতিবাহিত হলেও রাজ্য বর্তমান ডাবল ইঞ্জিন সরকারের পক্ষ থেকে কোন বিবৃতি কিংবা কোন নেতা মন্ত্রীরা পরিদর্শনে যাননি। এরই মধ্যে দেরিতে হলেও ঘুম ভাঙলো বিরোধী দল সিপিআইএম -এর।

শুক্রবার সকাল এগারোটা নাগাদ কদমতলা পরিদর্শনে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী সহ সিপিআইএম -এর একটি প্রতিনিধি দল।এদিন প্রথমেই তারা যান তারকপুরে, সেখানে মারপিটের ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া সঞ্জয় পালের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার খোঁজখবর নেন। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়া মোবাইল দোকান ব্যবসায়ীর বাড়িতে যান। কথা বলেন পরিবারের সাথে, সমবেদনা জানান তাদের। সেখান থেকে চলে আসেন কদমতলা বাজারে।সেখানে এসে হিংসাত্মক ঘটনায় উভয় সম্প্রদায়ের ছোট-বড় প্রায় ১০০ টি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন তিনি। তারপর ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, লুটপাট হয়ে যাওয়া দোকান গুলো পরিদর্শন করেন মানিক সরকার সহ তার টিম। কথা বলেন প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর সাথে।

তার মধ্যে অনেকেই পুনরায় দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত কদমতলা বাজার মসজিদ এবং একটি শনি মন্দির পরিদর্শন করেন সিপিআইএম রাজ্য নেতৃত্ব। তারপর দক্ষিণ কদমতলায় আক্রান্ত দুটি হিন্দু সম্প্রদায় পরিবারের বাড়িতেও যান পরিদর্শনে আসা সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব। ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন।সবশেষে কদমতলার মুলিউরা এলাকায় সংখ্যালঘুদের সাতটি বাড়ি পরিদর্শনে যান তারা। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকটি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে সমস্ত ঘটনা জানার চেষ্টা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ সকলে।

 এদিন পরিদর্শন শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকার সহ তার প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে দায়ী এবং ব্যর্থ। নাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। তাই এতদিন হয়ে গেলেও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সহ সরকারের কোন নেতা-মন্ত্রীরাই পরিদর্শনে আসেননি। কিংবা কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি এ বিষয়ে।তিনি আরো বলেন, যদিও এর অনেক আগেই বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা আসতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে মানুষের দিশা ভঙ্গ করতে এমন চক্রান্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তাছাড়া উক্ত ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক দোকানদার এবং আক্রান্ত সবকটি বসতবাড়ির গৃহস্থদের সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার আবেদন রাখেন তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়া পরিবারের আর্থিক ক্ষতিপূরণ সহ পরিবারের যোগ্য কাউকে একটি সরকারি চাকরির দাবিও রাখেন তিনি। পাশাপাশি গুলিতে আরো যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান শ্রী সরকার। মানিক সরকার বলেন, সরকার কোথায়? রেগার কাজ এবং নগরে টুয়েপের কাজ নেই। এমনকি সরকারের ২০ থেকে ২২ টি দপ্তরের কোন কাজই হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন রাজ্যের পরম্পরা ছিল ধর্ম যার যার, কিন্তু রাজ্য, গ্রাম এবং এলাকা সবার। রাজ্যের শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য তারা যাতে উৎসব সবার পরম্পরা হিসেবেই রাখে। তাহলে শান্তি সম্প্রীতি অটুট থাকবে। সবশেষে তিনি এলাকার সকল অংশের মানুষের কাছে অনুরোধ জানান যে সবাই যেন পূর্বের ন্যায় ধর্য্য না হারিয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ায়। তাছাড়া বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতার প্রাসঙ্গিকতাও তুলে ধরেন মানিক সরকার। এদিন কদমতলা কান্ড পরিদর্শন শেষে বিকেল তিন ঘটিকায় পানিসাগরে ঘটে যাওয়া হিংসাত্মক ঘটনার খোঁজখবর নিতে ছুটে যান।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য