Saturday, December 7, 2024
বাড়িরাজ্যব্যবসায়ী খুনের অভিযুক্ত যুবকের মৃত্যু গণপিটুনিতে, পৃথক খুনের মামলা নেবে পুলিশ

ব্যবসায়ী খুনের অভিযুক্ত যুবকের মৃত্যু গণপিটুনিতে, পৃথক খুনের মামলা নেবে পুলিশ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ অক্টোবর : রাজধানীর মেলার মাঠ এলাকায় ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার অভিযুক্ত রাহুল কৃষ্ণ রায়ের মৃত্যু হল বুধবার। গত ১৫ অক্টোবর মেলার মাঠে এক মোবাইলে দোকানে প্রবেশ করে সে হরিশংকর রায় নামে এক ব্যবসায়ীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে আহত করেছে। ১৭ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় এই ব্যবসায়ীর। কিন্তু ১৫ অক্টোবর ঘটনার পর রাহুল কৃষ্ণ রায়কে গণধোলাই দিয়েছিল স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী এবং পথচারীরা বলে অভিযোগ। তারপরই তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।

জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে রাহুল। এই ঘটনায় এবার নয়া মোড় নিতে শুরু করেছে। কারণ গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে রাহুলের। সেদিন ঘটনার পর যদি কিছু মানুষ অভিযুক্ত রাহুলকে আটকে রাখার চেষ্টা করত তাহলে আজ মৃত্যু হতো না। কিন্তু পুলিশকে কাছে না পেয়ে সেদিন আইন হাতে তুলে নিয়েছিল কিছু অতি উৎসাহী। এবার ঘটনার নয়া মোড় নিতে শুরু করেছে। কারণ গত ১৯ অক্টোবর জিবি হাসপাতালে রাহুলের মা তিথি রায় সরাসরি অভিযোগ তুলেছে, যারা গণপিটুনি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে। তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন, রাহুলকে মেলার মাঠ এলাকায় ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ওষুধ ক্রয় করার ফাঁকে সে পরিচিত হরিশঙ্কর সাহা দোকানে চলে যায়। হরি শংকর সাহার ছেলে রমেশ সাহা চার থেকে পাঁচ বছর আগে রাহুলের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল।

 সেই টাকা মিটিয়ে দেয়নি রমেশ। তারপর এই বিষয়ে রমেশের পিতা হরিশংকরকে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন মাসে মাসে দু হাজার টাকা করে দিয়ে ছেলের ঋন পরিশোধ করে দেবে। কিন্তু এতদিনে পরিশোধ করেননি তারা। এ বিষয়টি রাহুলের মাথায় চেপে বসেছিল। সে সম্পর্কে অবগত ছিলেন না তিনি এবং তার স্বামী ফনী ভূষণ রায়। এর মধ্যে সে কর্মসংস্থানের জন্য কিছুটা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ছিল। ১৫ অক্টোবর তাকে ডাক্তার দেখাতে মেলার মাঠ আনলে সে হরিশংকরের দোকানে প্রবেশ করে এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। তারপর সবকিছু পুলিশের চোখের সামনে হলেও কোন ভূমিকা নেয় নি বলে অভিযোগ রাহুলের মার। তিনি আরো বলেন, তারপর রাহুলকে মেলার মাঠ এলাকা থেকে মারধর করে জিবি হাসপাতালে আনে কিছু যুবক। তারপর জিবি হাসপাতালে কিছু যুবক তাকে মারধর করে বুকের মধ্যে রক্ত জমিয়েছে, বুকের পাঁজর, হাতের আঙ্গুল এবং পিঠের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। সবটাই জিবি হাসপাতালে সিসি ক্যামেরার নিচে হয়েছে। কিন্তু কারা এই ঘটনা করেছে সে বিষয়ে এখনো কিছু জানতে পারেননি। তবে আশেপাশে মানুষজন উনাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। তবে এখন বলার অপেক্ষা রাখে না যারা গণপিটুনি গিয়েছে তারাও সমান দোষে দোষী। কারণ পুলিশকে এখন খুনের মামলা হাতে নিয়ে যারা গণপিটুনি দিয়েছে তাদের জালে তুলতে হবে।

তবে এই বিষয়টা এতটা কঠিন হবে না। কারণ সবটাই ঘটেছে সিসি ক্যামেরার নিচে। রাহুল যে ধারায় দোষী ছিল, এখন রাহুল হত্যায় অভিযুক্তরাও সমান দোষে দোষী হবে। এই ঘটনায় এখন ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। যাইহোক এবার যুবকের পরিবার সরাসরি আঙ্গুল তুলবে অতি উৎসাহীদের দিকে। কারণ সেদিনই রাহুলের মা দাবি করেছিলেন তার ছেলে যেমন দোষী তেমনি তার ছেলেকে মারধরের ঘটনায় যারা জড়িত তারাও দোষী। এবার রাহুলের মৃত্যুতে সম্পূর্ণ দায় চাপবে অতি উৎসাহীদের দিকে। মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েছে রাহুলের মা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য