স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ অক্টোবর : সময় মত স্কুলে পৌঁছাতে না পেরে সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা দেখে জঙ্গলে লুকালেন এক শিক্ষিকা। ঘটনা চড়িলাম ব্লকের ধারিয়াথল উচ্চ বিদ্যালয়ে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঙ্গল দেববর্মার। কিন্তু রাজ্য সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের গুনগত শিক্ষা দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তার জন্য নেওয়া হয়েছে একাধিক উদ্যোগ। কিন্তু একাংশ শিক্ষক শিক্ষিকার কারনে সরকারের প্রচেষ্টা বারে বারে ব্যর্থ হচ্ছে। কখনো দেখা যায় কোন শিক্ষক স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বসে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।
আবার কখনো দেখা যায় কোন শিক্ষক কিংবা শিক্ষিকা নির্ধারিত সময়ের পরে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। সরকার প্রাইভেট টিউশানি বদ্ধ করার জন্য উদ্যোগ নিলেও, সেই উদ্যোগ মাঝ পথে থমকে যায়। সমগ্র রাজ্যে বর্তমানে শত শত সরকারি শিক্ষক প্রাইভেট টিউশানি করে। দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ ছিল চড়িলাম ব্লকের ধারিয়াথল উচ্চ বিদ্যালয়ের একাংশ শিক্ষক শিক্ষিকা প্রায় প্রতিদিন বিলম্ব করে বিদ্যালয়ে যান। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সোমবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় সাংবাদিকরা। দেখা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলেও কয়েক জন শিক্ষক শিক্ষিকা অনুপস্থিত রয়েছেন। ঠিক সেই সময় বিদ্যালয়ে আসেন শিক্ষিকা সোমা ঘোষ রায়।
তিনি বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তায় পা রাখার পর দেখতে পান বিদ্যালয়ে সংবাদ প্রতিনিধিরা ক্যামেরা নিয়ে ঘুরছে। সংবাদ প্রতিনিধিদের হাতে ক্যামেরা দেখে শিক্ষিকা সোমা ঘোষ রায় সোজা জঙ্গলের দিকে হাটতে থাকেন। যাতে করে নিজেকে আরাল করা যায়। সংবাদ প্রতিনিধিদের ক্যামেরায় সেই চিত্র ধরা পরে।শেষ পর্যন্ত সংবাদ প্রতিনিধিদের ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষিকা সোমা ঘোষ রায় জঙ্গলের রাস্তা থেকে ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি সংবাদ প্রতিনিধিদের ক্যামেরার সামনে বলতে থাকেন অনেক দূর থেকে ওনাকে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। রাস্তায় জ্যাম ছিল তাই ওনার বিলম্ব হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি প্রধান শিক্ষককে ফোনে অবগত করেছেন। তিনি নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ না করে উল্টো সংবাদ প্রতিনিধিদের বলেন সংবাদ প্রতিনিধিরা নাকি ওনাকে সমস্যা করছে। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঙ্গল দেববর্মাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন শিক্ষিকা সোমা ঘোষ রায় ওনাকে ফোন করে জানিয়েছেন ওনার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে কিছুটা বিলম্ব হবে। তবে তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হতে পারেন নি। তাই সোমবার ওনার সিএল কাটা হবে বলে জানান তিনি। এইদিন সংবাদ প্রতিনিধিদের ক্যামেরা দেখার পর শিক্ষিকা সোমা ঘোষ রায় যে ভাবে নিজেকে আরাল করার জন্য জঙ্গলের রাস্তা ধরে হাটতে শুরু করেছেন। তা রীতিমতো অবাক করার বিষয়। শুধুমাত্র ধারিয়াথল উচ্চ বিদ্যালয় নয় বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রায় প্রতিদিন বহু শিক্ষক শিক্ষিকা নির্ধারিত সময়ের পরে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। প্রশ্ন হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকারা যদি এই ভাবে বিলম্ব করে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন তাহলে বিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের কোন ব্যাঘাত ঘটবে না তো ? এখন দেখার দপ্তর কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।