স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ অক্টোবর : আবারো আগরতলা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে। প্রতিদিনের মতো সংবাদে শিরোনাম দখল করলো রবিবার। শনিবার রাতে রাজধানীর এডভাইজার চৌমুহনি থেকে এক যুবককে অপহরণ করে মারধর করার ঘটনায় গ্রেফতার হলো তিন যুবক। এদিন রাতের বেলা সমীর দাস নামে এক যুবককে ১০ থেকে ১২ জন মিলে অপহরণ করেছিল।
যারা অপহরণ করেছিল তারা পূর্বের শত্রুতার কারণে বাইক এবং গাড়ি নিয়ে এসে সমীরকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময় হেরিটেজ পার্কের সামনে নিয়ে নিস্তব্ধ জায়গায় সমীর নামে এই যুবককে বেধড়ক মারধর করে। তারপর আশেপাশে লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে সমীরকে উদ্ধার করে। সমীরের পরিবার পশ্চিম আগরতলা থানায় মামলা করার পর পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। ধৃত তিনজনের নাম আবির চক্রবর্তী, বিশাল বিশ্বাস এবং অর্ঘ্যদীপ লোধ। পুলিশ তাদের গোর্খাবস্তি, ইন্দ্রনগর এবং অরুন্ধতীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের সাথে আটক করা হয়েছে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত বিলাসবহুল গাড়িটি। গাড়ির নম্বর টি আর ০১ সিবি ০৫২১ । পশ্চিম আগরতলা থানার ওসি জানান, তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী মামলা হাতে নেওয়া হয়েছে। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে আরও ১০ থেকে ১২ জন। তাদেরও জালে তোলা হবে। কি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা, সে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না সন্ধ্যার পর থেকে আগরতলা শহরের পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে। দিন দিন শহরে উশৃংখলতা বেড়ে চলেছে। সাধারণ মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচল করার অবস্থা থাকে না বলেই চলে।
রাজধানীর উত্তর গেট, আর এম এস চৌমুহনী, মন্ত্রি বাড়ির রোড, রবীন্দ্র পল্লী, সিটি সেন্টার, আইজিএম চৌমুহনী, উত্তর গেট, খেজুর বাগান, হেরিটেজ পার্ক সহ বিভিন্ন এলাকার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এই জায়গাগুলোর মধ্যে গ্রুপ বেঁধে কিছু লম্পট উৎশৃঙ্খল যুবক পরিস্থিতিকে বিষিয়ে তুলছে। রাস্তার মধ্যে গাড়ি বাইক দাঁড় করিয়ে মদের আসল জমিয়ে তুলছে এবং অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে চলেছে। রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া যুবক যুবতীদের টিপ্পনি মেরে চলেছে। বিশেষ করে তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের ব্যবসায়িক ও পথচারীরা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। এদিকে কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ, পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ এবং এনসিসি থানার পুলিশ। শুধু তাই নয় তারা রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গ্রুপ বেঁধে দাঁড়িয়ে থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে বলে কান পাতলে শোনা যায়। আশেপাশের লোকজন বিষয়টি প্রতিবাদ জানাতে ভয় পায়।
কারণ শহরের মধ্যে তারা যে পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে তা নিয়ে কেউ মুখ খুললে প্রাননাশের ঘটনাও ঘটতে পারে বলে অভিমত অনেকের। তবে এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিন শহরের নিরাপত্তা আরো বেশি প্রশ্নের মুখে ফেলবে। এদিকে শহরের এ থানাগুলির ওসি সহ সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের ভূমিকা যথেষ্ট উদাসীনতার। কারণ গত কয়েক মাসে আগরতলা শহরে অপরাধমূলক ঘটনার নতুন সংস্করণ সামনে উঠে আসলেও সতর্ক হয়নি থানা বাবু থেকে শুরু করে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। কিন্তু এই উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং থানা বাবুদের কারণে বিরোধীরা লাগাতার অভিযোগ চলছে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বিজেপির অপশাসনে। এর বিরুদ্ধে প্রতিদিন প্রতিবাদ করছে তারা। কিন্তু সরকারকে কালিমা লিপ্ত করতে কোন সুযোগ হাতছাড়া করছে না কতিপয় পুলিশ।