স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ সেপ্টেম্বর : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা, কাজ – খাদ্য – ঘর পুনর্নির্মাণ করা, কৃষকদের জমি ও গবাদি পশুর ক্ষতিপূরণ প্রদান করা সহ বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার সিপিআইএম পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে গণ ডেপুটেশন প্রদান করা হয় জেলা শাসকের কাছে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, প্রাক্তন সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
রাজধানীর ওরিয়েন্ট চৌমহনী থেকে শুরু হয়ে আগরতলা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশন প্রদান করতে যায় সিপিআইএমের একটি প্রতিনিধি দল। পাশাপাশি মিছিলটি রাজধানীর অফিস লেন এলাকায় এসে শেষ হয়। তারপর অফিস লেন এলাকায় একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি সংঘটিত করা হয়।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে। তিনি ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বললেন, ১৯-২৩ আগস্ট যে বন্যা রাজ্যে সংগঠিত হয়েছে সেই সম্পর্কে সরকারের কাছে আগে থেকেই আশঙ্কা ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার এই বন্যা সম্পর্কে মানুষকে সঠিকভাবে অবহিত করেননি। কোন প্রকার সতর্কতাও দেয়নি সরকার। যার ফলে বন্যায় ৩৩ জনের প্রান গেছে। সরকার যদি আগে থেকে এই বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করত তাহলে তাদের প্রাণ বেঁচে যেত। কারণ যেসব এলাকা নদীর পার্শ্ববর্তী কিংবা তীরবর্তী সেসব এলাকার মানুষকে অগ্রিম সতর্ক করে সেসব এলাকার থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়। কিন্তু সরকার অগ্রিম খবর রেখেও মানুষকে কোনভাবেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনে নি। শুধু তাই নয় যে পরিমাণ সম্পদ মানুষের এ বন্যায় ক্ষতি হয়েছে সেগুলি ক্ষতি হতো না সরকার যদি আগে থেকে মানুষকে সতর্ক করতো।
যাই হোক রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল এখন এ বিষয়গুলো নিয়ে কোন দল বাজি করতে চায় না। কিন্তু মানুষের কথা বলতে গিয়ে যদি দলবাজি হয়, বা রাজনৈতিক বলে ধরে নেয় তাহলে সেটাই প্রকৃত রাজনীতি। তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, সব জায়গায় মানুষকে সঠিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে না। মানুষের কাজ নেই খাবার নেই। উদয়পুর বহু এলাকায় এখনো বন্যার জল রয়েছে। কিন্তু সরকার চাইছে মানুষকে জোর করে শিবির থেকে বের করে দিতে। এটা ঠিক নয়। মানুষের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করার প্রয়োজন। পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের জন্য কাজ খাদ্যের ব্যবস্থা করতে আগামী দু’মাস রেগার কাজ বরাদ্দ করা এবং মজুরি বৃদ্ধি করার জন্য দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু জানা নেই এগুলি কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে। উদ্বেগ করার বিষয় হলো বন্যা দুর্গতদের খাবার লুটে খাচ্ছে শাসক দলের কিছু কার্যকর্তা। তারা গাড়ি থেকে বন্যা দুর্গতদের চাল নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর চাইতে বড় উদ্বেগ জনক বিষয় হলো যারা শাসকদলের নয় তাদের সরকারিভাবে খাবার যতটা দেওয়ার কথা ততটা দেওয়া হচ্ছে না। আরো অভিযোগ তুলে বলেন, বন্যা হয়ে যাওয়ার ১৫ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেল ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আর্থিক সহযোগিতা এখনো মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। ফলে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। অবিলম্বে সরকারকে এ বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখার দাবি করলেন তিনি।