স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ সেপ্টেম্বর :পেশাগত কাজ সম্পাদনের উদ্দেশ্যে গত রবিবার রাতে, রাজধানীর মঠ চৌমোহনী অভিমুখে যাবার পথে মোটরস্ট্যান্ড শনিতলার কাছে কতিপয় দুষ্কৃতীর হাতে প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য, মিহির লাল সরকার, প্রণব শীল ও বিজয় কুমার সিংহ নামে চার গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদক ও সাংবাদিক আক্রান্ত হন। দুষ্কৃতীরা বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের যুব সংগঠনের সদস্য বলে নিজেদের পরিচয় দিয়ে উক্ত সাংবাদিকদের চূড়ান্ত লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত করার পাশাপাশি তাদের দুটো মোবাইল ও ক্যামেরা ভেঙে দেয় ও মূল্যবান কিছু জিনিসপত্র ছিনতাই করে ।
পরে, খবর পেয়ে পূর্বথানা কর্তৃপক্ষ পুলিশ বাহিনী সহ বেরিয়ে এলেই দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে বেশকিছু মদের বোতল সহ দুষ্কৃতীদের গাড়ি ও গাড়ির চালককে পুলিশ আটক করে। গভীর রাতে ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ায় ও সাংবাদিকরা প্রত্যেকেই দুষ্কৃতীদের মারে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন হয়ে পড়ায় রাতের মধ্যে এই হাড় হিম করা আক্রমণের খবরটি পত্রিকা, বৈদ্যুতিন মাধ্যম ও পোর্টাল দপ্তর গুলোতে পৌঁছুতে দেরি হলেও সকাল হতেই রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমগুলিতে এই খবর পৌঁছে যায়।
স্বাভাবিকভাবেই সহকর্মীদের উপর লাঞ্ছনা ও নিগ্রহের খবর সংবাদ মাধ্যমের দপ্তর গুলোতে পৌছুনো মাত্র সংবাদ দুনিয়া ক্রোধে ও ক্ষোভে, আগুনের মত জ্বলে ওঠে । এবং রাজ্যের প্রত্যেকটি সাংবাদিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। বিকেল নাগাদ রাজ্য থেকে প্রচারিত ও প্রসারিত সব কয়টি প্রিন্ট, বৈদ্যুতিন ও পোর্টাল সংবাদ মাধ্যম যৌথভাবে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ ধ্যানকরের সাথে দেখা করেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এসেম্বলি অব জার্নালিস্ট -র সাধারন সম্পাদক শানিত দেবরায়।
পুলিশের মহানির্দেশকের সাথে বৈঠকে সাংবাদিকদের উপর ক্রমবর্ধমান আক্রমণ ও তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি রাখা হয়। রাজ্যের সর্বত্র ছদ্ম রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কতিপয় দুষ্কৃতী সাংবাদিক এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর নানাভাবে আক্রমণ সংগঠিত করে চলেছে। অথচ, কোনোভাবেই পুলিশ এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নিতে সক্ষম হচ্ছে না। রাজ্যের সর্বত্র, বিশেষ করে আগরতলায় মাদকসেবী ও মাদক পাচারকারী কিছু দুষ্কৃতী, ছদ্ম রাজনৈতিক পরিচয়ে সাধারণ মানুষ ও পেশাদার সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
তিন বছর আগে ঠিক গতকালের দিনেই (০৮/০৯/২০২৪) দুটি সংবাদ প্রতিষ্ঠানে দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল, কিন্তু এদের কাউকেই এখনও পর্যন্ত বিচারের আওতায় আনা হয়নি। সাংবাদিকরা এই ঘটনায় পুলিশ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
যদিও পুলিশের মহানির্দেশক জানিয়েছেন, গত রাতের ঘটনায় এফ.আই.আর বর্ণিত তিন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে, এবং এদের যথাযথ শাস্তি হবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সম্প্রতি, শহরের বিভিন্ন জায়গায় মূর্তি আনয়ন এবং বিসর্জন কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজপথ জুড়ে ডি,জে চালিয়ে যেভাবে সাধারণ মানুষের চলাফেরা এবং জীবন যাপন অতিষ্ঠ করে তোলা হচ্ছে এর বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে সাংবাদিকদের তরফে দাবি জানানো হয়েছে।
এছাড়া ট্রাফিক ব্যাবস্থার উন্নতি, নৈশকালীন পাহারা এবং স্বাভাবিক আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়। প্রতিনিধি দলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন – প্রণব সরকার, জয়ন্ত দেবনাথ, অনল রায়চৌধুরী, বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য, জয়ন্ত ভট্টাচার্য ,সেবক ভট্টাচার্য , সুজিৎ দে, অভিষেক দে, সৌরজিৎ পাল, উত্তম চক্রবর্তী,অভিজিৎ ঘোষ, প্রতীক মহলানবিশ, মানব দেববর্মা ও রঞ্জিত দেববর্মা প্রমুখ।