স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ সেপ্টেম্বর : এ যেন এক অরাজক পরিস্থিতি! বাড়িঘর ফেলে রোদে বৃষ্টিতে ভিজে যারা মানুষকে পরিষেবা দিয়ে যায় তাদেরই রাস্তায় ফেলেছে ভোক্তারা। অভিযোগ বিলোনিয়া বিদ্যুৎ নিগম অফিসের কর্মীদের। সম্প্রতি বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিলোনিয়া মহকুমায়। ট্রান্সফরমার নষ্ট এবং বিদ্যুতিক তার ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা বহু ঘটেছে।
দিনরাত এক করে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে নিগমের লাইনম্যানরা। কিন্তু বিদ্যুৎ নিগমের ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারদের চরম গাফিলতির কারণে লাইনম্যানদের মার খেয়ে আসতে হচ্ছে অফিসে। এরই প্রতিবাদ তারা বিলোনিয়া পুরাতন টাউন হল রোড এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে নিরাপত্তার দাবি করে রবিবার। অভিযোগ শনিবার রাতে শংকর মঠ এলাকায় বিদ্যুতিক লাইনে কিছু সমস্যা হওয়ার পর ছুটে গিয়েছিল তারা। কিন্তু রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ দুই বিদ্যুৎ নিগমের কর্মী এবং গাড়ি চালককে রাস্তা অবরোধ করে প্রথমে আটকে রাখে এলাকার ক্ষুদ্ধ জনতা। তারপর গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে তিনজনকে বেধড়ক মারধর করে বিক্ষোভকারীরা। এভাবে রাত দুটা পর্যন্ত কাটলে তারা বিদ্যুৎ নিগমের ইঞ্জিনিয়ার এবং অফিসারদের ফোন করে জানায়। কিন্তু কেউই তাদের উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে ছুটে আসেনি। বরং তাদের বলা হয় সেখান থেকে পালিয়ে আসার জন্য। এভাবে যদি চলতে থাকে যে কোন সময় যেকোনো বিপত্তিও ভাবতে পারে বিদ্যুৎ নিগমের লাইনম্যানদের সাথে।
এদিন অবরোধকারী লাইনম্যানরা জানায় বিলোনিয়া অফিসে রাতের বেলা কোন ইঞ্জিনিয়ার থাকেনা। এবং তাদের ইঞ্জিনিয়ার এবং সেফটি অফিসার সুকান্ত বাবুর ভূমিকা অত্যন্ত হতাশা জনক। একই অবস্থা এসডিও ভাস্কর দাসের। বিদ্যুৎ নিগামে মানুষ কিংবা লাইনম্যানরা কোনো বিষয় জানতে ফোন করলে তারা ফোন পর্যন্ত ধরেন না। তাদের কোন ভূমিকেই নেই বিদ্যুৎ নিগমের। আরো আশ্চর্যজনক বিষয় হলো অফিসে লাইনম্যানদের জন্য নেই কোন টেবিল। এতটা বেহাল দশা তারা মুখ ফোটে বলতে এদিন বাধ্য হয়েছে। এ ধরনের পরিষেবা তাদের দিন দিন দায়িত্ব পালনে হতাশাগ্রস্ত করছে। তবে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে আরাম কেদারায় আছেন বিদ্যুৎ দপ্তর এবং বিদ্যুৎ নিগমের আধিকারিকরা। দামি দামি গাড়ি দিয়ে সচিবালয়ে এসে মন্ত্রী নির্দেশে সাংবাদিক সম্মেলন করে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন। মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন গুনে লাইনম্যানদের দুঃখ বোঝার চেষ্টা করছেন না তারা। ফলে লাইনম্যানদের মানুষ যেখানে পাচ্ছে সেখানে পেটাচ্ছে। হয়তো এর চাইতে বড় দুর্ভাগ্য আর কিছু নয়।