স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ আগস্ট : গত ১৯ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় রাজ্যে ৪,৬৫৮.৮৬ কিমি সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সড়ক, সেতু, কালভার্টের ক্ষতি সহ পূর্ত দপ্তরের এখন পর্যন্ত ১,৮২৫ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারী বর্ষণের ফলে রাজ্যের ৪,৬৪৪টি স্থানে ভূমিধসও হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪,০৮৭টি স্থানে ভূমিধস সরানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর পাশাপাশি ৩,৭৩৯ টি স্থানে সড়ক, সেতু ও কালভার্ট ভেঙ্গে পড়েছে।
এর মধ্যে ১,০৪৮ টি স্থানের প্রাথমিক পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার সচিবালের সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান স্বাস্থ্য দপ্তর এবং পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরন গিত্যে। তিনি আরো জানিয়েছেন, ভূমিধস ও পুনরুদ্ধারের কাজগুলি ২০০ জন ইঞ্জিনীয়ার সরাসরি তদারকি করছেন। রাজ্যের প্রধান ১১টি নদীর মধ্যে ১০টি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়েছিল। ফলে ৯৭.৩৪ কিমি বাঁধ ফুটো, ক্ষয়, ফাটল দেখা দিয়েছিল। বন্যা পরিস্থিতির সময় নদীর পাড়গুলোতে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার বালির ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। তিনি জানান, ভারী বর্ষণের ফলে উদয়পুর, ঋষ্যমুখ, কৈলাসহর, সাব্রুম সহ বেশ কয়েকটি স্থানের বাঁধগুলি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও জলসেচের বিভিন্ন উৎসের যেমন ডাইভারসন, লিফট ইরিগেশন, হাইপাওয়ার লিফট ইরিগেশন, ডিপ টিউবওয়েল, সম্মলবোর টিউবওয়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাতে জলসম্পদ দপ্তরের এখন পর্যন্ত প্রায় ৬২৫ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্যসচিব কিরণ গিত্যে জানান, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা এখন পর্যন্ত ১,১০৭ বার ত্রাণ শিবিরগুলিতে পরিদর্শন করেছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে এখন পর্যন্ত ১,৬৫০ টি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।
তাতে ৪২,১৫৫ জন স্বাস্থ্য পরিষেবা পেয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের মাধ্যমে ২৩, ১৬৫টি পরিবারের ৩৫,৪৭৭ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য শিবিরগুলিতে ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, ত্বক সংক্রমণ, জ্বর, আঘাত ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানীয়জল ফুটিয়ে পান করার জন্য বন্যায় দুর্গত মানুষদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত ৭৩৯ ব্যাগ ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করা হয়েছে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনীয়ার রাজীব দেববর্মা, জলসম্পদ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনীয়ার শ্যামলাল ভৌমিক, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরার মিশন ডিরেক্টর রাজীব দত্ত।