স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৪ আগস্ট : সবকা সাথ, কর্পোরেটরের বিকাশ! আর এই কর্পোরেটর দ্বারা ত্রান শিবিরে অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রদানের অভিযোগ তুলতেই বিজেপি ৬ আগরতলা মণ্ডলের অফিস সম্পাদিকা পায়েল দাসকে মারধর করা হয়। অভিযুক্ত কাউন্সিলর আগরতলা পুর নিগমের ১২ নং ওয়ার্ডের কর্পোরেটর সান্তনা সাহা। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হল রাধানগর এলাকার লোকজন। এদিকে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন অভিযুক্ত কর্পোরেটর। তাঁর দাবি এই অভিযোগ মিথ্যা। জানা যায়, ৬ আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন বিভিন্ন এলাকার ন্যায় রাধানগর মোটর স্ট্যান্ড সংলগ্ন আবাসনেও বন্যার জল ঢুকে পরে।
বাধ্য হয়ে আবাসনের লোকজন আশ্রয় নেয় ত্রান শিবিরে। ত্রান শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজনদের জন্য প্রশাসন থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই খাবার নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ পুর নিগমের ১২ নং ওয়ার্ডের কর্পোরেটর সান্তনা সাহার বিরুদ্ধে। অভিযোগ পোকা ধরা চাল দিয়ে খিচুরি রন্না করে সেই খিচুরি খেতে দেওয়া হচ্ছে ত্রান শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজনদের। বিজেপি ৬ আগরতলা মণ্ডলের সম্পাদিকা পায়েল দাস সহ শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজন শুক্রবার সন্ধ্যায় কর্পোরেটর সান্তনা সাহা ত্রান শিবিরে গেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রদান কেন করা হচ্ছে সেই বিষয়ে জানতে চান। তখন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন কর্পোরেটর। অভিযোগ কর্পোরেটর সান্তনা সাহা উত্তেজিত হয়ে মণ্ডল সম্পাদিকা পায়েল দাসের হাতে থাকা মোবাইল ভেঙ্গে ফেলেন। শুধু তাই নয় পায়েল দাসকে মারধর করে তার গলায় থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায় কর্পোরেটর সান্তনা সাহা। আক্রান্ত পায়েল দাস জানান শতাধিক লোকের সামনে ওনাকে মারধর করেছে কর্পোরেটর সান্তনা সাহা। শুধু তাই নয় ত্রান শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজনদের অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেছে। পায়েল দাস কর্পোরেটর সান্তনা সাহার পদত্যাগের দাবি জানান। পাশাপাশি তিনি জানান সান্তনা সাহা পদত্যাগ না করলে তিনি ১২ নং ওয়ার্ড অফিসের সামনে আত্মহত্যা করবেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহিলারা জানান কর্পোরেটর সান্তনা সাহা বিনা অপরাধে পায়েল দাসকে মারধর করেছে। পায়েল দাস কোন কিছু করে নি।
পায়েল দাসের মোবাইল হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে সান্তনা সাহা। তারপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কর্পোরেটর সান্তনা সাহা। অপর এক মহিলা জানান কর্পোরেটর সান্তনা সাহার কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। কারন সান্তনা সাহা এইদিন পায়েল দাসের সাথে এমনটা করেছে, আরেক দিন অন্য কারো সাথে এমনটা করবে। কর্পোরেটর সান্তনা সাহা প্রতিনিয়ত মানুষকে হেনস্তা করে। মানুষকে হেনস্তা করা কর্পোরেটর সান্তনা সাহার পেশা হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। শুক্রবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাধানগর আবাসন এলাকার জনগণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। অবিলম্বে কর্পোরেটর সান্তনা সাহার পদত্যাগ দাবি জানান তারা। পায়েল দাস এইদিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান ৫ ঘন্টার মধ্যে শুক্রবারের ঘটনার সঠিক বিচার না হলে তাঁকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হোক।রাধানগর আবাসনে বসবাসকারী এক মহিলা জানান তাদেরকে কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয় না।
কর্পোরেটর সান্তনা সাহার কাছে গেলে ওনাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়। এদিকে অভিযুক্ত কর্পোরেটর সান্তনা সাহা সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগকারী পায়েল তাকে ছয় মাসের মধ্যে কাউন্সিলর থেকে পদত্যাগ করাতে চেয়েছেন। কারণ গত কয়েকদিন আগে পায়েলের ভাই অর্জুন দাসের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছিল। অর্জুন দাস একজন চোর এবং ড্রাগস মাফিয়া, তাকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন পায়েল। কিন্তু বিষয়টি পুলিশের নজরে নিয়ে অভিযুক্ত অর্জুনকে গ্রেফতার করিয়েছেন তিনি। বর্তমানে অর্জুন জেলে রয়েছে। তারপরেই ছয় মাসের মধ্যে কাউন্সিলর পর থেকে তাকে সরানোর হুমকি দিয়েছিলেন পায়েল বলে দাবি করেন তিনি। জানা যায় কর্পোরেটর সান্তনা সাহা শুক্রবার ত্রান শিবিরে গিয়ে মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার করার সময় পায়েল দাস গোটা ঘটনা মোবাইলের ক্যামেরা বন্দি করেন। তা দেখতে পান কর্পোরেটর সান্তনা সাহা। নিজের অপকর্ম ক্যামেরা বন্দি হচ্ছে দেখতে পেয়েই তেলে বেগুনে জলে উঠেন সান্তনা সাহা। এখন দেখার সান্তনা সাহার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।