স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩১ জুলাই : বুধবার বিকেলে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। দীর্ঘদিনের রাজনীতির জীবনে তাঁর বড় প্রাপ্তি হলো এইদিন। তেলেঙ্গানার রাজভবনে তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আলোক আরাধে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান। তিনি তেলঙ্গানা বাসীর স্বার্থে আগামী দিন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে শপথ নেন। তারপর তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী অনুমুলা রেমন্ত রেড্ডি রাজ্যপাল যীষ্ণু দেববর্মার হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দিয়ে অভিনন্দন জানান।
তারপর তিনি সেই রাজ্যের মন্ত্রী সভার সদস্যদের সাথে পরিচিতি গ্রহণ করেন। তারপর তাদের সাথে ছবি তুলে ভোজনে অংশ নেন। এদিন হায়দ্রাবাদ রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখার পর যীষ্ণু দেববর্মাকে স্বাগত জানান সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অনুমুলা রেমন্ত রেড্ডি। সেখানে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয় রাজ্যপাল যীষ্ণু দেববর্মাকে। উপস্থিত ছিলেন সেই রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। তাদের সাথেও কথা বলেন যীষ্ণু দেববর্মা। প্রসঙ্গ, গত শনিবার রাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তেলেঙ্গানার জন্য ত্রিপুরার প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মাকে নিয়োগ করেন। প্রথম ত্রিপুরা থেকে রাজ্যপালের জন্য নিযুক্তি পাওয়া রাজ্যবাসীর জন্য গর্বের। পরবর্তী সময় রাজ্যের জাতি জনজাতিরা খবরে কাগজে এবং সংবাদ মাধ্যমের চ্যানেলে যীষ্ণু-কর্তা রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্তি পাওয়ার খবর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন। যীষ্ণু দেববর্মা ত্রিপুরার রাজ পরিবারের একজন সদস্য।
১৯৫৭ সালে ১৫ আগস্ট রমেন্দ্র কিশোর দেববর্মন এবং কোমল প্রভা দেবীর কনিষ্ঠ সন্তান হন যীষ্ণু দেববর্মা। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্র জীবন থেকেই মেধাবী যীষ্ণু দেববর্মা রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৬, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে তিনি পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসন থেকে বিজেপি -র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরবর্তী সময় জয় না পেলেও তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারপর ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি চড়িলাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়াই করেছিলেন। আশাও অনুরূপ ফল করে ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী হন।
পাশাপাশি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অর্থ দপ্তর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর, পঞ্চায়েত দপ্তর এবং বিদ্যুৎ নিগমের দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর ত্রিপুরা উপমুখ্যমন্ত্রী সহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর গুলির দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছেন। তারপরেও রাজ্য রাজনীতি থেকে এক ইঞ্চিও সরেন নি তিনি। এমনকি তার গুরুত্ব দলের মধ্যে কোন অংশেই কম হয়নি। যথারীতি এবার তেলেঙ্গানার গুরুদায়িত্ব পেলেন রাজ্যের যীষ্ণু কর্তা। তবে রাষ্ট্রপতি ত্রিপুরা থেকে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে রাজ্যপাল হিসেবে বেছে নেওয়ায় ত্রিপুরাবাসী গর্বিত। প্রথম এই রাজ্যে কেউ রাজ্যপাল হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।