স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ জুলাই : পারিবারিক অশান্তিতে রহস্যজনক মৃত্যু গৃহবধূ। মৃত গৃহবধুর নাম পুনম মজুমদার। স্বামীর নাম রাজীব দেব। রাজীব দেব আগরতলা জজ কোর্টে কর্মরত রয়েছেন। তাদের বাড়ি সোনামুড়া রবীন্দ্র নগরে। পুনম মজুমদারের বাপের বাড়ি উদয়পুরে। মৃত পুনমের মা ও ভাইয়ের অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই রাজীব দেবের পরিবারের পনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ছেলে সরকারি কর্মচারী হওয়ায় দুদিন পর পর তারা পনের দাবি জানাতো এবং নির্যাতন করত। বর্তমানে পুনমের আড়াই বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কিন্তু তারপরও তার উপর নির্যাতন কমতো না। আরো অভিযোগ, পুনমকে বাপের বাড়ি থেকে বাইক আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল।
এর জন্য বহুবার অশান্তি হয়েছে। এমনকি মাত্র ২৪ বছর বয়সী এই পুণমকে তার স্বামী সন্দেহ করে বাপের বাড়ির লোকজনদের সাথে কথা বলতে দিত না। বাপের বাড়ি থেকে তিনবার মোবাইল ফোন দেওয়া হলে সেগুলি ভেঙে ফেলা হতো। কিছুদিন আগে স্বামীর সাথে পুনমের ঝগড়া এতটাই তুমুল হয়, স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয়ে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। বহু বোঝানোর পর স্বামীর বাড়িতে ফিরেছিল পুনম। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। শুক্রবার দুজনের মধ্যে ঝগড়া এতটা চূড়ান্ত আকার ধারণ করে যে মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে পুনমের, এমনকি পুনমের সিম কার্ড পর্যন্ত নষ্ট করে ফেলে তার স্বামী। তারপর রাতের বেলা কোন এক সময় আগাছা মারার ঔষধ খেয়ে ফেলে পুনম।
তার স্বামী বিষয়টি টের পেয়ে সাথে সাথে হাসপাতাল নিয়ে যায়। পুনমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মহাকুমা হাসপাতাল থেকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়। জিবি হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুনমের মৃত্যু হয়। এদিকে পুনমের স্বামী জানান, ২০১৯ সালে ৩০ জুন উদয়পুরের বাসিন্দা পুনম মজুমদারকে সামাজিক ভাবে বিয়ে করেন। আর বিয়ের পর সবকিছু ঠিকঠাক চললেও দেখা গেছে তার শশুর মশাই ভাড়াটিয়া এক মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই সম্পর্কে জেনে পরিবারে শুরু হয় অশান্তি। তারপর এ বিষয়টি পুনম এবং তার নজরে আসার পর শাশুড়িকে বোঝানো হয়েছিল ঘরে অশান্তি না করার জন্য। তারপর কিছুদিন শাশুড়ি বাড়ি থেকে বের হয়ে তার বাড়িতে এসে থাকে। এবং তার শ্যালক বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। এ বিষয়টি নিয়ে পুনম সবসময় চিন্তিত ছিলেন। যার কারণে শুক্রবার রাতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে দাবি করেন মৃত গৃহবধূর স্বামী। শাশুড়ির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বলেন, তার কাছে বাইক রয়েছে। সে নতুন করে কেন শ্বশুর বাড়ি থেকে বাইক চাইতে যাবে। এইদিকে শনিবার জিবি হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর পুনমের মৃতদেহ পরিবারের লোকজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে পুনম কেন আত্মহত্যা করেছে তা স্পষ্ট নয়। যদিও পুনমের বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হবে বলে জানা যায়।