স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ জুলাই : বিদ্যুৎ ভোগান্তি সারা রাজ্যের মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। কোথাও ভোল্টেজ কম, আবার কোথাও তথাকথিত পাওয়ার কার্ট মানুষকে নাজেহাল করছে। যার কারনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অভিভাবকের যোগ্যতা নিয়েও পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যমে ঝড় তুলছেন আমজনতা। কারণ রাজ্যের বিদ্যুৎ নিগমের উপর আর ভরসা রাখতে পারছে না মানুষ। লাগাম ছাড়া ভাবে পরিষেবার অবনতি ঘটছে। জানা যায়, গত তিন মাস যাবৎ খোয়াই থানাধীন পূর্ব গণকি এলাকায় বিদ্যুতের ভল্টিজের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে আছে।
এতে করে বিভিন্ন বাড়ি ঘরে ফ্রিজ, টিভি সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বারবার বিদ্যুৎ নিগমে জানিয়ে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে শুক্রবার সকালে পূর্ব গনকি এলাকার লোকজন জাম্বুরা বিদ্যাসাগর নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় পথ অবরোধ করে। এতে করে আটকে পড়ে রাস্তার দুদিকের যানবাহন। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে জাম্বুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুশান্ত দেবনাথ। পরবর্তীতে ছুটে আসে বিদ্যুৎ দপ্তরের এসডিও নিহার দেববর্মা। সকাল ১০ টা থেকে কাজ শুরু হবে, এই আশ্বাসের পর এলাকায় দীর্ঘ দেড় ঘন্টা পর অবরোধ মুক্ত করে এলাকাবাসীর। তবে বিদ্যুৎ ভোগান্তি হল খোয়াই -এ নয়। গোটা রাজ্যে এই সমস্যা দারুণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ নিগমের অভিভাবক সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করছেন এখন আর রাজ্যে লোডশেডিং হয় না। যা করা হয় সেটা হল পাওয়ার কার্ট।
কিন্তু পাওয়ার কার্ট হওয়ার পেছনে মূলত কারণ হলো মানুষের বাড়ি ঘরে কতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে তার হিসাব দেওয়া হচ্ছে না। এর জন্য আগরতলা শহরে আবার হুইলিয়া জারি করেছেন। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা গ্রহণ করলে প্রত্যেক ভোক্তাকে স্থানীয় বিদ্যুৎ নিগম অফিসে গিয়ে অবগত করতে হবে। নাহলে বড়সড় জরিমানা করা হবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো নির্দেশিকা জারি হওয়ার এক মাস অতিক্রান্ত হতে চলেছে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিগম অভিযানে নামতে হিম্মত দেখাচ্ছে না। আর এদিকে মানুষ তাড়াহুড়া করে নির্দিষ্ট সময়সীমা ১০ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ নিগমের অফিসে গিয়ে দু হাজার টাকা থেকে পায় ১০-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে বাড়িঘর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লোড বৃদ্ধি করেছে। জনগণের আরো বক্তব্য লোড অবশ্যই বৃদ্ধি করা হয়েছে, কিন্তু মান্নাদের আমলের যন্ত্রাংশ এবং ট্রান্সফরমারের পাওয়ার পরিবর্তন হয়নি। যার কারনে বলা যায় মোটা অংক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হলো পরিষেবার মান উন্নত হয় নি বিদ্যুৎ নিগমের। আগরতলা শহরে গত দুদিনের দেখা গেছে বিদ্যুতের লোডশেডিং।
ভপসা গরমের মধ্যেও দুপুর থেকে সারারাত ২-৩ মিনিট পর পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বর্তমানে বিদ্যুৎ নিগম কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্ব এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছাচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা পর্যন্ত লোডশেডিং চললেও আগাম ঘোষণা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না মানুষকে। স্মার্ট সিটিতে চব্বিশ ঘন্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা থাকার কথা থাকলেও নিম্ন পরিষেবা পর্যন্ত দিতে পারছে না স্মার্টসিটি বাসীকে নিগম কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় অস্বাভাবিক গরমে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, অসুস্থ রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে। সব মিলিয়ে বলা যায় দৈনন্দিন কাজকর্মের উপর আঘাত নামিয়ে আনছে রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। আর আগরতলা শহরে যদি এ ধরনের পরিষেবা মানুষ পায় তাহলে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় কি অবস্থা সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে বলা চলে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। যা বর্ণনার অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে।