স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ জুলাই :কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের দেশব্যাপী শ্রমিক বিরোধী নীতির প্রতিবাদে ১২ দফা দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে সামিল হতে সি আই টি ইউ -র পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সংগঠিত করা হয়। দেশব্যাপী কর্মসূচি অঙ্গ হিসেবে আগরতলা শহরে ও এক প্রতিবাদ মিছিল সংঘটিত করে সি আই টি ইউ। রাজধানীর অফিস লেন স্থিত সি আই টি ইউ -র প্রধান কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয়।
উপস্থিত ছিলেন সি আই টি ইউ -র রাজ্য কমিটির সভাপতি মানিক দে সহ অন্যান্যরা। সরকারের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে সি আই টি ইউ -র রাজ্য কমিটির সভাপতি মানিক দে বলেন, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে সরকারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। এই একক সংখ্যার গরিষ্ঠতা না পাওয়ার পেছনে মূলত কারণ হলো বিজেপি -র নীতির বিরুদ্ধে দেশবাসী একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রায় দিয়েছে। তারপরেও তারা সরকারের এসে শ্রম বিরোধী নীতিগুলি কার্যকর করার চেষ্টা করছে। এরমধ্যে অন্যতম সিদ্ধান্ত হলো সরকার শ্রমকোড কার্যকর করতে ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, দৈনিক ৮ ঘণ্টার জায়গায় ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা কাজ করানো হচ্ছে শ্রমিকদের দিয়ে। এবং তাদের শ্রম চুরি করে মালিকরা বেতন দিচ্ছে মাত্র ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। কিন্তু আইনের রয়েছে সমকাজে সম বেতন দিতে হয়। কারোর বেতন ২৬ হাজার টাকা নিচে দেওয়া যায় না। এবং শ্রমিকদের ইপিএফ এর যে ব্যবস্থা ছিল সেটা পর্যন্ত সরকারের গাফিলতিতে বঞ্চনার শিকার শ্রমিকরা। কারণ ইপিএফের মাধ্যমে শ্রমিকদের জমানো অর্থ দেওয়া হতো।
এখন মালিকরা সেই অর্থ আত্মসাৎ করছে। এ বিষয় নিয়ে মামলা হলে যাতে কঠোর শাস্তি না হয় তার জন্য শাস্তির হার কমিয়ে দিয়েছে এ সরকার। অপরদিকে সারাদেশে আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আউটসোর্সিং কর্মী, এসপিও, পাম্প অপেরেটর সহ কেউই নিদির্ষ্ট সময় মত বেতন পাচ্ছে না। সরকারি কর্মচারীদের নিউ পেনশন স্কিমের অধীনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। কারণ ২০১৮ সালে সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জুলাই মাস থেকে নিউ পেনশন স্কিম কার্যকর করা হয়েছে। এটি প্রত্যাহার করার জন্য দাবি করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি সারা দেশে লাগামহীন ভাবে চলছে। এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ত্রিপুরা রাজ্যেও দিনও ডাকাতি চলছে। এর উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই রাজ্যের দুর্নীতি হচ্ছে। একই সাথে অভিযোগ তুলেন আউটসোর্সিং প্রথা নিয়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন বন্দর, জাতীয় সড়ক, এয়ারপোর্ট বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানান মানিক দে। তিনি বলেন, আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে জানান দেওয়া হচ্ছে যেভাবে সরকার গত ১০ বছর চলেছে, সেভাবে আগামী দিন চলতে পারবে না। আজকে দেশব্যাপী এই প্রতিরোধ দ্বারা সরকারকে সতর্ক করা হচ্ছে। নাহলে পরবর্তী সময় দিল্লির সমাবেশ করা হবে, এতে সরকার সংশোধন না হলে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে। আগামী আগস্ট মাসে কলকাতায় সি আই টি ইউ -র সাধারণ বৈঠকে এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এদিন মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।