স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ জুলাই : বহিরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের রাজ্যে শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ‘ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সি অব ত্রিপুরা’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব হচ্ছেন এই কমিটির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক। এই কমিটির মাধ্যমে দেশ-বিদেশের ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের রাজ্যে শিল্প স্থাপনের সুযোগ সহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। শুক্রবার সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা।
তিনি বলেন, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ করার লক্ষ্যে বাধারঘাট মৌজায় একটি প্রধানমন্ত্রী একতা মল স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে দপ্তর। ২৪ হাজার ১২২ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে এই একতা মলটি স্থাপন করা হবে। তাতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এই একতা মলটি স্থাপন করা হলে রাজ্যের উৎপাদিত পণ্য শুধু ত্রিপুরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা, সমগ্র দেশের সঙ্গেই যুক্ত হবে। ফলে রাজ্য ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বিনিয়োগ করার জন্য উৎসাহিত করতে গত ৬ মার্চ, ২০২৪ দিল্লীতে নর্থ ইস্টার্ন ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সামিটে ত্রিপুরায় বিনিয়োগের জন্য ১৪টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ফলে ত্রিপুরায় ১৮৬১৫১ কোটি টাকা বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি জানান, দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল পরিকাঠামো গড়ে তুলে রপ্তানি ও আমদানি ব্যবস্থাকে আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সাবুমে একটি মাল্টিসেক্টর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম ইতিমধ্যেই সাইট ডেভেলপমেন্ট, বাউন্ডারি ওয়াল ও গেট নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী জানান, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের উদ্যম পোর্টালে ৩০ জুন, ২০২৪ পর্যন্ত ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এন্টারপ্রেনারশিপ ক্ষেত্রে মোট ৫৯ হাজার ১৮২টি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা পোর্টালে এখন পর্যন্ত রাজ্যের ৪৯ হাজার ৯৫১ জন শিল্পী/কারিগর নাম নথিভুক্ত করেছেন। এরমধ্যে ২১৮০ জন শিল্পী/কারিগরকে বিভিন্ন গ্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে ১১৮০ জন ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক ঋণের জন্য আবেদন করেছেন। শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে দপ্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম ও স্বাবলম্বন প্রকল্পে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রামে এখন পর্যন্ত ৪২ জনকে এবং স্বাবলম্বন প্রকল্পে ১৪৮৭ জনকে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ত্রিপুরা রুরাল লাইভলিহুড মিশন এবং ত্রিপুরা আরবান লাইভলিহুড মিশনের অধীন মোট ২৭৭০টি স্ব-সহায়ক দলের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় সহ মূলধনের জন্য ১০২৮.৪২ লক্ষ টাকা রিলিজ করা হয়েছে। এছাড়াও শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মাধ্যমে ১৩১৭ জন স্ব-সহায়ক দলের সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মলনে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আরও জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের সঙ্গে মোট ৭১৫.৯৮ কোটি টাকার বৈদেশিক বাণিজ্য হয়েছে। শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে রাজ্যের যুবক-যুবতীদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করার পরিকল্পনা নিয়েছে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর। এর জন্য বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে কাজ করছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের রাজ্যে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা বিশ্বশ্রী বি।