স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ জুন : গত বছর রথ যাত্রাকে কেন্দ্র করে কুমারঘাটে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার জেরে এই বছর সতর্ক প্রশাসন। রথযাত্রাকে সামনে রেখে শুক্রবার পশ্চিম জেলার জেলা শাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডঃ বিশাল কুমার। জানা যায়, গত বছর উল্টো রথকে কেন্দ্র করে কুমারঘাটে ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা।
কুমারঘাট ইস্কন মন্দির আয়োজিত রথ জাত্রাকে কেন্দ্র করে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। কুমারঘাটের মাতঙ্গিনী চৌমুহনী এলাকায় রথের চুড়া বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের সংস্পর্শে চলে যায়। এতে করে মুহূর্তের মধ্যে রথে আগুন লেগে যায়। শুরু হয় ভক্তদের দৌড়া দুরি। এরই মধ্যে আগুনে পুরে মৃত্যু হয় দুই শিশু ও মহিলা সহ মোট ৬ জনের। অল্প বিস্তর আহত হয় বহু ভক্ত। দমকল বাহিনীর কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে কুমারঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের মধ্য থেকেও বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। কুমারঘাটের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সরকার থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে যে তদন্ত রিপোর্ট আসে সেই রিপোর্ট নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারপর পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু পুনঃতদন্তের রিপোর্টের বিষয়ে রাজ্যবাসী কোন কিছুই জানতে পাড়ে নি। সে যাই হোক। কুমারঘাটের সেই ঘটনাকে মাথায় রেখে এই বছর আগাম সতর্কতা অবলম্বন করেছে প্রশাসন।
রথযাত্রাকে সামনে রেখে শুক্রবার পশ্চিম জেলার জেলা শাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। মূলত পশ্চিম জেলায় যে সকল মন্দিরের পক্ষ থেকে রথ যাত্রার আয়োজন করা হয় সেই সকল মন্দিরের পদাধিকারিকদের নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডঃ বিশাল কুমার। তিনি জানান ৭ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত রথযাত্রা উপলক্ষ্যে নানান কর্মসূচি পালন করা হবে। এতে আগরতলা শহরের প্রায় ৬ টি সংস্থা সংগ্রহণ করবে। তার মধ্যে বড় আকারে রথযাত্রার আয়োজন করবে জগন্নাথ জিউ মন্দির ও ইস্কন মন্দির। এই দুই মন্দিরের পদাধিকারি সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে।এই বছর রথের উচ্চতা ৫ মিটারের মধ্যে হতে হবে। বিদ্যুৎ নিগম দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সকল রাস্তা দিয়ে রথ নিয়ে যাওয়া হবে, সেই সকল রাস্তায় কোন বিদ্যুৎ পরিবাহী তার যেন নিচে না থাকে তা নিশ্চিত করতে। এইদিনের বৈঠকে বিদ্যুৎ নিগম দপ্তর ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস, পূর্ত দপ্তর, আরক্ষা প্রশাসন সহ অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এই বছর রথের সামনে পুলিশের গাড়ি থাকবে। সাধারন মানুষের নিরাপত্তার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান পশ্চিম জেলার জেলা শাসক।