স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ মার্চ : রাজ্যপালের ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিধানসভা অধিবেশনের কাজ। এইদিন রাজ্যপালের ভাষণ চলাকালীন সময় বিরোধী বিধায়করা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ উত্থাপন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একটা সময় বিরোধী বিধায়করা বিধানসভার অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে। রাজ্যপালের ভাষণ শেষে ১৫ মিনিট সময়ের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়।
১৫ মিনিট পর পুনঃরায় শুরু হয় অধিবেশনের কাজ। শুরুতেই ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দের দাবি পেশ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী। তারপরই ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য বাজেট পেশ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। বাজেট পেশ করতে গিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজ্যে জিএসডিপি বৃদ্ধির হার ১৩.২৮ শতাংশ হবে। তিনি আরও বলেন কৃষি কাজের সাথে যুক্ত ২৬ টি সৌরশক্তি গ্রিড পাম্পের জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ২২ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ বর্তমান সরকার।
তাই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সামাজিক ভাতা বৃদ্ধি করে ২০০০ টাকা করার ঘোষণা দেন উপমুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক ভাতা ২ হাজার টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তার জন্য ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৬৪৫ কোটি টাকা। রাজ্য সরকার মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করবে। সেই কমিটি মাসিক ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া, সময়সীমা ও অন্যান্য জরুরি পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। দুর্গা পুজার আগেই রাজ্যের ৩.৮১ লক্ষ্য সামাজিক ভাতা প্রাপককে ২ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হবে।
টিএসআর জওয়ানদের জন্যও খুশির সংবাদ রয়েছে এই প্রস্তাবিত বাজেটে। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যন্ত এলাকার টিএসআর ক্যাম্পের সংস্কার করার জন্য ৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য সুবেদার পদ পর্যন্ত রেশন ভাতা জন প্রতি মাসিক ৮০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও টিএসআর জওয়ানদের অবসরের সময়সীমা ৫৭ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৬০ বছর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করতে গিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় মাপের বিনিয়োগের জন্য ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে মূলধনি ব্যয়ের পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫,২৮৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। এইবারের বাজেটে নতুন করে কোন কর বৃদ্ধির প্রস্তাব নেই। প্রস্তাবিত বাজেটে রেভিনিউ খাতে আয় ধরা হয়েছে ২১০৪৭.১৫ কোটি টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৬০৬.৮৯ কোটি টাকা। ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৫৫৯.৭৪ কোটি টাকা। অপরদিকে মূলধনি খাতে আয় ধরা হয়েছে ৫২৭৬.০০ কোটি টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২৮৫.৭৮ কোটি টাকা। ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৯.৭৮ কোটি টাকা। রেভিনিউ খাত ও মূলধনি খাত মিলিয়ে মোট আয় ধরা হয়েছে ২৬৩২৩.১৫ কোটি টাকা। অপরদিকে রেভিনিউ খাত ও মূলধনি খাত মিলিয়ে মোট খবর কিংবা ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৮৯২.৬৭ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৫৬৯.৫২ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে একাধিক নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য পর্যাপ্ত ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এই বাজেট রাজ্য ও রাজ্যবাসীর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের।