Sunday, September 8, 2024
বাড়িরাজ্যদুর্ঘটনায় তরুণ সাংবাদিকের মৃত্যু, সহকর্মীরা অশ্রু জলে শেষ বিদায় দিলেন এই সাংবাদিককে

দুর্ঘটনায় তরুণ সাংবাদিকের মৃত্যু, সহকর্মীরা অশ্রু জলে শেষ বিদায় দিলেন এই সাংবাদিককে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ জুন : সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে ঝরে গেল তরুণ সাংবাদিকের প্রান। মৃত তরুণ সাংবাদিকের নাম সমরেশ রাহা। ঘটনার সংগঠিত হয়েছে মঙ্গলবার রাত পৌনে বারোটা নাগাদ রাজধানীর মিলন চক্র এলাকায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় এদিন রাতের বেলা আগরতলা প্রেস ক্লাব থেকে সহকর্মীর বাইক নিয়ে সে বাধারঘাট গিয়েছিল।

দীর্ঘক্ষণ না ফেরার পর সহকর্মীরা তাকে ফোন করে, কিন্তু তার কোন সাড়া পায়নি। এদিকে আগরতলা প্রেস ক্লাবের এক সাংবাদিক জানতে পারে মিলনচক্র এলাকায় একটি ভয়াবহ বাইক দুর্ঘটনার সংঘটিত হয়েছে। সেই সাংবাদিক ছুটে যায় মিলন চক্র এলাকায়। সেখানে গিয়ে দেখে আহত বাইক চালককে দমকল কর্মীরা উদ্ধার করে নিয়ে গেছে হাঁপানিয়া হাসপাতালে। কিন্তু বাইকটি রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় ঘটনাস্থলে যাওয়ার সাংবাদিকের। সাথে সাথে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে এই সাংবাদিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইক চালকের নাম এবং বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে পুলিশ জানায় এখনো সেই তথ্য সংগ্রহ করা যায় নি। একটি গাড়ির সাথে বাইকের সংঘর্ষ হয়েছে। আহত যুবককে উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে হাপানিয়া হাসপাতালে। তারপর হাঁপানিয়া হাসপাতালে গিয়ে সে সাংবাদিক জানতে পারে সমরেশ বাধারঘাট থেকে ফেরার সময় দুর্ঘটনায় পড়েছে। সাথে সাথে অন্যান্য সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা হাপানিয়া হাসপাতালে গিয়ে দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছে সমরেশ। তাকে রেফার করা হয়েছে আই এল এস হাসপাতালে।

কিন্তু আইএলএস হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সমরেশকে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে সমরেশের অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সহকর্মীদের মধ্যে। এদিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে বাইকটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। বুধবার মৃতদেহ জিবি হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্তের পর পরিবারের লোকজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় প্রথমে মৃত তরুণ সাংবাদিকের কৃষ্ণনগর স্থিত বাড়িতে। বাড়িতে মৃতদেহ পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকজন। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে মা। ছেলেকে শেষ বিদায় দিতে চাই ছিল না মা! দুঃস্বপ্নে যেন ভাবে নি এমনটা হবে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সবাই আছে, কিন্তু নেই সমরেশ! মা কিছুই বিদায় দিতে চাইছিল না সমারেশকে। প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করে ঘরে ফিরে মা বলে আর ডাকবে না সমরেশ। ভোটের ফলাফলের দিনেও সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মায়ের হাতে টিফিন খেয়েছিল সমরেশ। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মায়ের কাছ থেকে ‘মা আসি’ বলে গিয়েছিল।

কিন্তু মা, ছেলে কেউই জানতে না এটাই যে চিরতরে বিদায়। বুধবার প্যাকেট বন্দি দেহ ফিরেছে। কিন্তু মাকে মা বলে ডাকার সমরেশ ফিরে নি। বাড়িতে পরিজন ও সহকর্মী সমারেশের নিথর দেহ চিতার আগুনে তোলার আগে নিয়ে এসেছে শেষ দেখা দেখার জন্য। মা মাথা হাতিয়ে দিয়েছে এই নিথর দেহে। তারপর শববাহী গাড়ি দিয়ে সমরেশের দেহ নিয়ে আসা হলো আগরতলা প্রেস ক্লাবের সামনে। সেখানে সহকর্মীরা শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন। তারপর তার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় খবরের চ্যানেলে। সেখানেও সহকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান। তারপর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বটতলা মহাশ্মশানের উদ্দেশ্য। এখন দেখার পুলিশ ঘাতক গাড়ি চালককে জালে তুলতে পারে কিনা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য