স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৩ মার্চ। কাজ কি ভাবে করতে হবে তা আগে শিখতে হবে। আগের কাজের সঙ্গে এখনের কাজের বিস্তর তফাৎ আছে। আগের কাউন্সিলাররা তাদের নিজ নিজ ওয়ার্ডে থাকত না। রাজ্য সরকার কাউন্সিলারদের প্রতি নির্ভরশীল নয়। দায়িত্ব নিজে বুঝে নিয়ে কাজ করতে হবে। সোমবার রবীন্দ্র ভবনে নগরোন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত নির্বাচিত আরবান বডির সদস্য সদস্যাদের নিয়ে আয়োজিত এক দিবসীয় অভিযোজন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। জুগ বহু এগিয়ে গেছে। মানুষ একজন জনপ্রতিনিধিকে মনে রাখতে তখনই যখন লক্ষ্যের আগে সেই কাজ সম্পাদন করে দেখাবেন। যারা ভেবেছিল ত্রিপুরাকে আজীবন তারাই চালাবে এখন তারাই হারিয়ে গেছে। ১০০ বছরের পরিকল্পনাকারীদের কোন কাউন্সিলার নেই। দীর্ঘ দিন যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের কাউন্সিলারের সংখ্যা মাত্র ৩। মানুষ বোঝে এই ধরনের লোক দিয়ে কাজ করানো সম্ভব নয়। মোদীর মানসিকতায় মানুষ উদ্ভাসিত হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আত্ম প্রচার ও অহংকারী মানসিকতা নিজের মধ্যে আনলে বিনাসের রাস্তায় যেতে বাধ্য। তার জন্য চাল, চরিত্র, চেহারের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। ঈর্ষা, ব্যক্তি প্রেম, অপরিপক্কতা, অসামাজিক মানসিকতা, আত্ম বিশ্বাস না থাকা, ব্যক্তিত্ব, পারদর্শিতা , দূর দর্শয়িতার অভাব, সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করা, দুর্নীতি, কমিশন এগুলি জীবনের সাথী হলে নিশ্চিত মানুষ অসফল ব্যক্তিত্ব হবেই। প্রধানমন্ত্রী নিজেকে বলেন চৌকিদার, দারোয়ান, প্রধান সেবক। এগুলি আগে কোন প্রধানমন্ত্রী মুখ থেকে শোনা যায়নি। আমি শব্দ থেকে দূরে সরে আমাদের শব্দের মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
একা কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সংবিধান দেয়নি। নির্ণয় করবে সকলের আলোচনার মাধ্যমে। এই পরিভাষা গুলি কঠিন নয়। কিন্তু দুনিয়ায় লোভ, লালসা, নিরাপত্তা , বাড়ি , গারি এগুলি নিয়ে ভাবলে চলবে না। শরীরে তেল লাগিয়ে জলে নেমে কাজ করার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। পায়ে হাঁটার মানসিকতা যেমন থাকবে, ঠিক তেমনি ভাবে বিশ্বের দামী গারিতে চড়লেও সেই মানসিকতা রাখতে হবে। ক্ষমতা বড় বিষয়। একে সঠিক ভাবে গ্রহণ করতে হবে। এই রাজ্যে বহু মানুষ আছেন যারা ত্রিপুরাতে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু তারা কোথায় হারিয়ে গেছে জম পর্যন্ত জানেনা। উত্তর প্রদেশের মধ্যে রাজ্যে জাত, পাত , পন্থ পরাজিত হয়েছে। আধ্যাত্মিক বাস হওয়ার পরেও এতদিন উত্তর প্রদেশ থেকে জাত পাত পন্থ এতদিন কেউ সমাপ্ত করতে পারেনি। যা করে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিবার বাদের রাজনীতি করা কংগ্রেসকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ত্রিপুরাতে ৯০০ অবৈধ ভাবে নির্মীয়মাণ দলীয় কার্যালয় ভাঙ্গা হয়েছে। জনগণের জমি নিয়ে যারা দলীয় কার্যালয় চালায় তাদের মানসিকতা কি হবে তা মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। ২৫ বছর ধরে গৃহীত সিদ্ধান্ত গুলি মানুষের হীতের বিপরীতে যাচ্ছিল। মানুষকে শোষণ করে রাজনীতির দিন শেষ। মহিলাদের স্ব শক্তি করণ ও নেশা মুক্তি ত্রিপুরা গড়ার কাজ করছে ত্রিপুরা। ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে ত্রিপুরার মহিলাদের জন্য। ভাওতাবাজীর জুগ আগে ছিল। এখন আর নেই বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। কাজের পন্থায় পরিবর্তন এসেছে। জনতার সঙ্গে জন সংযোগ, সময়ের আগে কাজ শেষ করা, ব্যক্তিত্বের মধ্যে অহংকার না আনার আহ্বান জানান তিনি। এতে সর্বাঙ্গীণ বিকাশ হবে বলে জানান তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শান্তনা চাকমা, মেয়র দীপক মজুমদার সহ অন্যান্যরা। এদিন স্বচ্ছ বধূ সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়।