Wednesday, May 28, 2025
বাড়িরাজ্যআইনজীবীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ইঞ্জিনিয়ার ফোরামের

আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ইঞ্জিনিয়ার ফোরামের

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ মে : আইনজীবীর বিরুদ্ধে এবার মাঠে নামল ইঞ্জিনিয়ার ফোরাম। অভিযোগ আদালত চত্বরে বিদ্যুৎ নিগমের সিনিয়র ম্যানেজার অপু পাল আইনজীবীর হাতে আক্রান্ত ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ নিগমের ব্যর্থতা সম্পর্কে সমগ্র রাজ্যের মানুষ অবগত। রাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে নাজেহাল মানুষ ক্ষুব্ধ। জায়গায় জায়গায় বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসে ঝুলানো হচ্ছে তালা। বিদ্যুৎ-এর দাবিতে সড়ক পর্যন্ত অবরোধ করা হচ্ছে। তাতেও বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের কুম্ভ নিদ্রা ভঙ্গ হচ্ছে না।

বুধবার বিদ্যুৎ-এর দাবিতে আইনজীবীরা রাজধানীর ফায়ার সার্ভিস চৌমুহনীতে সড়ক অবরোধে সামিল হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝতে পেরে আইজিএম হাসপাতাল সংলগ্ন বিদ্যুৎ নিগম অফিসের সিনিয়র ম্যানেজার অপু পাল আদালত চত্বরে ছুটে যান। তখন ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা অপু পালকে সেখানে বসিয়ে রাখে। আইনজীবীদের স্পষ্ট বক্তব্য আদালতে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অপু পালকে ছাড়া হবে না। অপু পাল সেখানে সকলের সামনে এমনকি সংবাদ মাধ্যমের সামনে স্বীকার করে দপ্তরের ১৯১২ নাম্বারে কল করলে কল রিসিভ করা হয় না। তা তিনিও জানেন। কিন্তু তিনি কি করবেন। যদিও সেই সময় দপ্তরের কোন আধিকারিক ঘটনাস্থলে যাওয়ার সাহস দেখান নি। শেষ পর্যন্ত দপ্তরের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আইনজীবীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। এই ঘটনার পর বিদ্যুৎ দপ্তরের ব্যর্থতা প্রকাশ্যে চলে আসে। এইবার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে পাল্টা ময়দানে নামল বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারদের ফোরাম। বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ নিগমের কর্মরত ইঞ্জিনিয়াররা রাজধানীর বনমালিপুর স্থিত বিদ্যুৎ নিগমের অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ডেপুটেশন প্রদান করা হয় বিদ্যুৎ নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের কাছে। দাবি করা হয়েছে অবিলম্বে অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।  উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ দপ্তরের এজিএম মিতা সাহা সহ অন্যান্যরা। এজিএম মিতা সাহা জানান, আদালত চত্বরে অপু পালের সাথে যে ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ পূর্বের পরিকল্পনা ছিল। কারণ সেখানে বিভিন্ন দপ্তরের লোক ছিলেন।

এভাবে একজন সিনিয়র ম্যানেজারকে শারীরিক নিগ্রহ করা অমানবিক ঘটনা। সে সময় কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন অপু পাল। তাই অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরো জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হলে প্রথমে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন সংস্কার করতে হয়। তারপর এলটি লাইন সংস্কার করতে হয়। তারপর সিঙ্গেল কল নেওয়া হয়। ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করা সম্ভব নয় বিদ্যুৎ কর্মীদের জন্য। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক মাসে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সহ নির্বাচন ছিল। যার কারণে মরসুম অনুযায়ী গাছ কাটা সম্ভব হয়নি।

 তারপরেও অস্বাভাবিক গরমের মধ্যে গত কয়েকদিনের বিভিন্ন লাইন শাটডাউন করে গাছ কাটা হয়েছে। তারপরেও রাত্রে সম্প্রতি রেমাল নামে ঘূর্ণিঝড়ে এত বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো বলেন বিদ্যুৎ নিগমের কর্মীরা যথেষ্ট সচেতন এবং সক্রিয়ভাবে কাজ করে। বিশেষ করে আগরতলায় যারা দায়িত্ব পালন করছে তারা সকলেই অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সমস্যা হলে কিছুটা হলেও সহ্য করতে হবে। বিশেষ করে আগরতলায় থাকলে এগুলি অভ্যাস করে নিতে হবে বলে জানান তিনি। তবে এইদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা এক প্রকার স্বীকার করে নেন দপ্তরের এজিএম মিতা সাহা। তিনি নিজে স্বীকার করেন ১৯১২ নাম্বারে এক সাথে ২৫ জন লোকের কল রিসিভ করা সম্ভব। কিন্তু রাজ্যে বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে ৯ লক্ষ। তার ১ শতাংশ লোকও একসাথে ১৯১২ নাম্বারে কল করতে পারবে না। অর্থাৎ দপ্তরের ভুল নীতি ও পরিকল্পনার ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। ১৯১২ নাম্বার ছাড়াও বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে গ্রাহকরা যেন অভিযোগ জানাতে পারে তার জন্য ওয়াটসাপ নাম্বার এবং অনলাইনে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১৯১২ নাম্বারে কল ব্যতীত বিকল্প ব্যবস্থা গুলি সম্পর্কে গ্রাহকরা কতটা অবগত রয়েছে তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা হারে হারে অনুধাবন করতে পারছেন যে দপ্তরের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এখন দেখার দপ্তর বিষয়টির প্রতি কতটা নজর দেয়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!