Saturday, July 27, 2024
বাড়িরাজ্যক্ষণিকের ঝড়ে সবকিছু যেন বদলে গেল দীপরাজের পরিবারের, বাড়ি পৌঁছালো কফিন বন্দী...

ক্ষণিকের ঝড়ে সবকিছু যেন বদলে গেল দীপরাজের পরিবারের, বাড়ি পৌঁছালো কফিন বন্দী দেহ, মিলল না প্রশাসনিক সহযোগিতা

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ মে : স্বামী চাকরি পরীক্ষা দিয়ে আসার পর জড়িয়ে ধরার কথা ছিল স্ত্রীর। কিন্তু কফিন বন্দী হয়ে স্বামী বাড়ি ফিরবে সেটা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেনি স্ত্রী। মাত্র চার মাস আগে কমলপুরের বাসিন্দা দীপরাজ দেববর্মার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা হয়েছিল। চার মাস পর ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা সবকিছু যেন উলটপালট করে দিলো। ত্রিপুরা কো-অপারেটিভ ব্যাংকের পরীক্ষা কেন্দ্র পরেছিল গোহাটিতে।

আর গুহাটিতে যাওয়ার সময় গত এক মে রাতের বেলা ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি সংগঠিত হয়। এই ঘটনায় দীপরাজের মৃত্যু হয়। শেষ পর্যন্ত দীপরাজের কফিনবন্দী দেহ বাড়ি ফিরে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল গোটা পরিবার। ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মা বাবা উভয়েই। ছেলে ব্যাংকে চাকরি করবে বলে অনেক আশা ভরসা ছিল। কিন্তু ছেলের অকাল মৃত্যুতে ভাগ্যের কাছে হেরে গেলেন মৃতের মা বাবা। শুক্রবার বাড়ির সামনে কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যখন অ্যাম্বুলেন্স এসে দাঁড়ায় তখন ছেলেকে শেষবারের মতো বাড়িতে আনতে গেটে ছুটে যায় দীপরাজের বাবা। মুখে ছিল একটাই কথা – ও বাবারে এটা কি হয়ে গেল? তারপর কফিনবন্দি দেহ যখন বাড়ি নিয়ে আসা হয় তখন ছেলে হারা বাবা কান্নায় ভেঙে পড়লেন মাটিতে। একটা সময় পর দশ মাস গর্ভে ধারণ করা দীপরাজের মা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। ছেলের নিথর দেহ বাড়ি থেকে কিছুতেই যেন শেষকৃত্যের যেতে দিতে চাইছে না। মাত্র চার মাস আগে বিয়ে হয়েছিল ছেলের। ছেলে ও ছেলের বউ সকলকে নিয়ে সুখের সংসার বাধার স্বপ্ন দেখেছিলেন দীপরাজের মা। ভেবেছিলেন ছেলে ব্যাংকের চাকরি করবে।

 কিন্তু আজ সবকিছুই রয়ে গেছে, নেই শুধু দীপরাজ। উল্লেখ্য, কো অপারেটিভ ব্যাংকের ইটেরভিউ দিতে গিয়ে আসামের দিমাসা জেলার দিতাকছড়ায় সেরওয়ালি বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কমলপুরের মহারানীর যুবক দীপরাজ দেববর্মার। মৃত্যু হওয়ার পর প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো সহায়তা করা হয়নি। তারা নিজেরা গাড়ি ভাড়া করে শিলচর গিয়ে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা করা হয়নি। এই বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ডি ওয়াই এফ আই, টি ওয়াই এফ, এস এফ আই, টি এস ইউ -র নেতৃত্ব। ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব জানান দুর্ঘটনার ২১ ঘণ্টা পর শিলচর মেডিকেল কলেজে মৃতদেহ আনা হয় ময়না তদন্তের জন্য।

শুক্রবার সকালে মৃতদেহ বাড়িতে আনা হয়। তারপর কবর দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এখন পর্যন্ত কোন প্রশাসনিক কোন কর্মী আধিকারিক মৃতের পরিবারের সাথে দেখা করেনি। তারপর মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট এল. ডারলং না থাকায় তারা ডি সি এম জিনা প্রসাদ বড়ুয়ার সাথে কথা বলা হয়েছে। এবং দাবি করা হয়েছে যাতে প্রশাসনিক কর্মীরা মৃতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। তারা জানান দুর্ঘটনা হলেও প্রশাসনের একজন ব্যক্তিও দেখা করেন নি। তারা সরকারের সমালোচনা করে মৃতের পরিবারের একজনের চাকরির দাবি করেন।  এদিন প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জাগ্রত করার চেষ্টা করল বিরোধী যুব সংগঠন। তাদের বক্তব্য প্রশাসন ঘুমিয়ে আছে রাজ্যে। তাই প্রশাসনকে জাগাতে মহকুমার শাসক অফিসে আসতে হয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য