স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ ফেব্রুয়ারি : দলের সিদ্ধান্তের উর্ধ্বে উঠে শক্তি পরীক্ষা দিতে ময়দানের নামলেন দুই মন্ত্রী। দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি কাছ থেকে কোন ধরনের অনুমতি নেওয়া হয়নি। যা হয়তো রীতিমতো ভারতীয় জনতা পার্টি অন্দরে একপ্রকার অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে সুবিশাল বাইক মিছিল করে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে কর্মী-সমর্থকরা। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, মন্ত্রী রামপসাদ পাল।
এদিন বাইক এবং অটোর মিছিলে কয়েক শতাধিক কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা জানান, রাজ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। রাষ্ট্র বিরোধী শক্তি ফিরে আসতে এ ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। এটা তাদেরই কাল্পনিক ব্যাপার। এর থেকে মানুষকে সোচ্চার হতে এবং বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকতে বাইক মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। দীর্ঘ ২৫ বছর শায়েস্তা করতে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীরা মাঠে নেমেছে। দীর্ঘসময় সিপিআইএম পাপ করার পরেও রাজ্যের মানুষ তাদের ক্ষমা করেছিল। ভারতীয় জনতা পার্টি ভেবেছিল ২৫ বছর রাজ্যকে ধ্বংস করেছে সিপিআইএম, তাই এখন রাজ্যকে শ্রেষ্ঠ রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বৈরাচারী বামফ্রন্টের ধ্বংসকারীরা ২৫ বছর রাজ্যকে শোষন করেছে। তারা আবার নাকি রাজ্য কে শোষণ করতে চায়। এর জন্য তারা ষড়যন্ত্র করে আবারো সামনে আসছে। তাই এধরনের শয়তানদের কিভাবে শায়েস্তা করা যায় তার জন্য জানান দিতে মাঠে নেমেছে। এবং আগামী দিনের সিপিআইএম যাতে স্বৈরাচারী হিসেবের না আসতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন রামপ্রসাদ পাল।
এদিকে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি জারি করে বলেছেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রদেশ বিজেপির উদ্যোগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন থেকে একটি বাইক মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করবে বলে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া প্রচার চলছে৷ প্রদেশ বিজেপির তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে যে, দলের তরফে কোনো মোর্চা, মন্ডল কিংবা জেলাকেই এই ধরণের বাইক মিছিলের জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়নি৷ তবে কোনো বিধায়ক চাইলে তার নির্বাচনী ক্ষেত্রে এই ধরণের বাইক রেলির আয়োজন করতে পারেন৷ তবে আগাম সূচনা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু বুধবার রাজ্যের কোথাও এমন কোনো বাইক মিছিল রয়েছে বলেও প্রদেশ কমিটির কাছে কোনো তথ্য নেই৷ বিজেপি প্রদেশ কার্য়করি কমিটি মনে করছে- বাইক মিছিল নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে য়ে প্রচার চলছে এর পেছনে গভীর কোনো ষড়য়ন্ত্র রয়েছে৷ কেননা, মিছিলের পোষ্টারে প্রধানমন্ত্রী, সর্বভারতীয় সভাপতি ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকলেও সেখানে প্রদেশ বিজেপি সভাপতির ছবি নেই। যা সেখানে দৃশ্যমান নয়৷ পরিবর্তে একজন বিধায়কের ছবি রয়েছে৷ এতেই স্পষ্ট হয়, বিষয়টির অসত্য প্রচার মাত্র এবং সন্দেহের উর্দ্ধে নয়। প্রদেশ কমিটি দলের সকল অংশের কার্য়কর্তাদের কাছে আহ্বান রাখছে এই প্ররোচনায় পা না দিতে৷ তবে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রদেশ বিজেপির উদ্যোগে একটি বাইক মিছিল আয়োজিত হবে বলে প্রদেশ বিজেপির পক্ষ থেকে। এমনটাই বিবৃতি প্রকাশের পরেও দুই মন্ত্রী দোলের নির্দেশকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে বুধবার মিছিল সংঘটিত করেছে। এতে আবারো স্পষ্ট হয়ে গেছে দলের অন্দরে নেই শান্তি। কেউ কারোর কথা শুনছে না। ফলে মিছিল দেখে রীতিমতো সাধারণ মানুষের চোখ কপালে ঠেকেছে।