স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ ফেব্রুয়ারি : দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কর্মী সমর্থকদের বাড়িঘর দেখতে গেলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। এদিন বিরোধী দলনেতা গান্ধীগ্রাম স্থিত ক্ষতিগ্রস্ত দলীয় কর্মীদের বাড়িঘর ঘোরে দেখে তীব্র নিন্দা জানান। মিছিলে যাওয়ার পরিণামে এ ধরনের হামলা সংঘটিত করেছে শাসকদল বলে অভিযোগ তুলেন তিনি। এদিন গান্ধীগ্রামস্থিত সি পি আই এম পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা কমিটির সদস্য স্বপন দেব এবং দলের গান্ধীগ্রাম লোকাল কমিটির সম্পাদক উত্তম সাহার বাড়িতে গিয়ে ভাংচুরের চিত্র স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সাথে।
পরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, সন্ধ্যা সময় বাড়িঘরে পুরুষ লোক থাকেন না, তখন মেয়েরা ঘরে থাকেন। সেই সময় এভাবে হামলা এবং লুট করার ঘটনা রাজনৈতিক কাপুরুষত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। যেসব যুবকদের দিয়ে এ ধরনের হামলা হুজ্জতি সংগঠিত করা হয়েছে তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। যুবকরা জানত মিস কলে চাকরি পাবে। ঘরে ঘরে চাকরি হবে। সরকার আসলে প্রথম বছরে ৫০ হাজার শূন্য পদ পূরণ করা হবে। কিন্তু এগুলি কিছুই হয়নি। বিজেপি দলে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। তাই একটা অংশকে পয়সা দিয়ে এ ধরনের কাজে জড়িয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে সরকারের বিরুদ্ধে যুবকদের আন্দোলন শক্তিশালী হতে না পারে। কিন্তু এগুলি বেশিদিন চলবে না। আগামী দিন বড় একটা অংশ তাদের পাশে থাকবে না। ছোট একটা অংশ তাদের পাশে থাকবে। যারা করছে তারা নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারছে। কিন্তু সেসব যুবকদের ভাবার দরকার যখন রাজ্যে এ সরকারটা থাকবে না, তখন চা খেয়ে যেভাবে কাপ ফেলে দেওয়া হয় সেভাবে তাদেরও ফেলে দিয়ে পিছু তাকাবে না বিজেপি নেতৃত্বরা।
উল্লেখ্য, রবিবার গান্ধীগ্রামস্থিত সি পি আই এম পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা কমিটির সদস্য স্বপন দেব এবং পার্টির গান্ধীগ্রাম লোকাল কমিটির সম্পাদক উত্তম সাহার বাড়িতে ধারালো অস্ত্র, লাঠি সাটা নিয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। দুই নেতাকে বাড়িতে না পেয়ে, দুর্বৃত্তরা লুট, ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। বামেদের অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে। জানা যায়, স্বপন দেবের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে বাড়ির দরজা, জানালা ভাঙচুর করে। পরে ঘরে ঢুকে দুইটি মোটর বাইক ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। তারপর দুষ্কৃতীরা উত্তম সাহার বাড়িতে চড়াও হয়। উত্তম সাহাকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে খোঁজ করে। উত্তম সাহা দ্রুত বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে দুষ্কৃতীরা বাড়ির দরজা, জানালা, গ্রিল ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে জায়গা কেনার জন্য ব্যাংক থেকে তুলে রাখা তিন লক্ষ টাকা, সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং একটি টিভি সহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় ও একটি বাইক ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পরবর্তী সময়ে বিজেপির সশস্ত্র বাহিনী গান্ধীগ্রামে সুভাষ কলোনির বাসিন্দা মাধবী দেবনাথের বাড়িতে আক্রমণ করে। এই আক্রমণ গুলির আগে দুপুরে দুর্গাবাড়ি বাজারে দিলীপ শীলের সেলুনে ঢুকে তাকে মারধোর করে। মোবাইল ফোন ছিনতাই করে বিজেপি দুর্বৃত্তরা বলে অভিযোগ। সোমবার বিরোধী দলনেতা ছাড়াও ছিলেন পশ্চিম জেলা সম্পাদক রতন দাস, সিপিআইএম নেতা পবিত্র কর সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।