গন্ডাছড়া (ত্রিপুরা, ১৭ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : ত্রিপুরার বৃহত্তর জলাধার এবং বৃহত্তর মৎস্য ভান্ডার হিসাবে পরিচিত ধলাই জেলার ডুম্বুর জলাশয় সহ প্রায় চার হাজার হেক্টর জায়গা চলে গেছে বেসরকারি কোম্পানির হাতে।প্রাথমিক কাজও শুরু করে দিয়েছে বেসরকারি এসএন অ্যাকোয়া অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। কিন্তু নাছোড়বান্দা বাম সংগঠন। শুরু থেকেই ডুম্বুর জলাশয়কে বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে গণ–আন্দোলন জারি রেখেছে সিপিআইএম নেতা–কর্মীরা। ডুম্বুর জলাশয়কে বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার ডেপুটেশন, গণ–ডেপুটেশন দেওয়ার পর শনিবার ধলাই জেলার গন্ডাছড়ায় বিক্ষোভ মিছিল এবং বিক্ষোভ সভা করেছে বামপন্থী বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন।
এদিন মৎস্যজীবী ইউনিয়ন, তফশিলি জাতি সমন্বয় কমিটি এবং জিএমপি-র যৌথ উদ্যোগে মহকুমা সদরের দলীয় আফিস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে দুর্গাবাড়ির মুখে এসে শেষ হয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ সভা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন তফশিলি জাতি সমন্বয় কমিটির নেতা সুবোধ মল্লিক। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য নেতা সুধন দাস, বিধায়ক নয়ন সরকার, বিধায়ক সুদীপ সরকার, প্রাক্তন বিধায়ক ললিতমোহন ত্রিপুরা এবং বিভাগীয় সম্পাদক ধনঞ্জয় ত্রিপুরা সহ অন্যান্য নেতারা।
এদিনের সভায় ডুম্বুর জলাশয়কে বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বক্তারা। রাজ্য নেতৃত্ব এবং প্রাক্তন বিধায়ক সুধন দাস ভাষণ রাখতে গিয়ে সত্তরের দশকের সেই করুণ চিত্রগুলির কথা তুলে ধরেন। সুধন দাস তাঁর ভাষণে বলেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে ডুম্বুর বাঁধ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু এর জন্য বুলংবাসা, রাইমা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল থেকে বহু জাতি–উপজাতি পরিবারকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এমন–কি হাতি দিয়ে পুলিশ লেলিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছিল। সৃষ্টি হয় ডুম্বুর জলাশয়।
গরিব মেহনতি মানুষজন জীবিকা হিসাবে মৎস্য শিকারকেই বেছে নেন। শেষ পর্যন্ত হাজার হাজার মৎস্যজীবী, কৃষক জুমিয়াদের সর্বনাশ করে গন্ডাছড়া মহকুমার মৎস্য খামার সহ গোটা ডুম্বুর জলাশয়টিকে বেসরকারি এসএন অ্যাকোয়া অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি কোম্পানির হাতে তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার এবং এডিসি প্রশাসন। ডুম্বুর জলাশয়কে বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে মহকুমাবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান রাখেন সুধন দাস।