স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ ফেব্রুয়ারি : সব প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে অমরপুর শান্তি পল্লীর বাসিন্দা বিদ্যুৎ দাস হুইল চেয়ার দিয়ে বিক্রি করে চলেছে সবজি। আর্থিক দুর্বল পরিবারে এই ১০০ শতাংশ দিব্যাঙ্গন যুবক বিদ্যুৎ দাস মাধ্যমিক উর্ত্তীর্ণ হয়ে চাকুরির পেছনে ছুটেছিল বহু দিন। নেতা মন্ত্রীদের নিকট বহু অনুরোধ জানিয়ে বিদ্যুৎতের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি চাকুরি।
কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিদ্যুৎতের উপর সাংসারিক চাপ, আর্থিক বোঝা ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চাকুরির আশায় আর বসে না থেকে বেঁচে থাকার তাগিদে কিছু একটা করে অর্থ রোজগারের মাধ্যমে আর পাঁচটা পরিবারের মত মাথা উঁচু করে বাঁচার জন্যই প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পাড়ায় পাড়ায় সব্জি ফেরি করতে বেরিয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে তার বাহন হল সরকারের দেওয়া হস্তচালিত হুইল চেয়ার। নিজের হস্ত চালিত হুইল চেয়ারে কাঠের বক্স তৈরি করে, বিভিন্ন রকমের সব্জি নিয়ে প্রতিদিন ভোরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে সব্জি বিক্রি করেই পরিবারের অন্ন সংস্থানের পাশাপাশি আর্থিক স্বনির্ভর হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শতভাগ দিব্যাঙ্গন বিদ্যুৎ।
ব্যবসা কেমন হয়? জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বলেন, সরকারের দেওয়া দিব্যাঙ্গন ভাতা আর সব্জি ফেরি করে যে অর্থ পায়, তা সম্বল করেই পরিবার পরিজনদের নিয়ে বেঁচে আছেন। তবে হস্ত চালিত হুইল চেয়ার চালিয়ে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে সব্জি ফেরি করতে খুবই কষ্ট হয় বলে জানান বিদ্যুৎ। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে সংসার চলবে না। বেঁচে থাকার জন্য রোজগারতো করতেই হবে। তাই সমস্ত দুঃখ কষ্টকে নিত্য সঙ্গী করেই নিজের হস্ত চালিত হুইল চেয়ার নিয়েই সে রাস্তায় নেমে সব্জি বিক্রি করে চলেছেন গত দুই বছর ধরেই। বিদ্যুৎয়ের আক্ষেপ, যদি একটি যন্ত্র চালিত হুইল চেয়ার তার থাকতো তাহলে কষ্টের অনেকটাই লাগব হতো। বিদ্যুৎ আরো জানান যদি তাকে সরকার থেকে একটি টমটম কিংবা মোটর চালিত যানের ব্যবস্থা করে দিত তাহলেও সে উপকৃত হতো। কিন্তু সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলেও কোন সদুত্তর মিলছে না বলে জানান বিদ্যুৎ। তবে কবে নাগাদ স্বনির্ভর হওয়ার জন্য ভাগ্যে জুটবে টমটম কিংবা সরকারি চাকরি হবে সেই আশা আর রাখছে না বিদ্যুৎ। তাই ভরসা একমাত্র হুইল চেয়ার।