স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ জানুয়ারি : গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজ্যের প্রায় নয় লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার রেশন কার্ডধারী পরিবারকে এককালীন দুমাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে কার্ড প্রতি ৫ কেজি করে চাল প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত জাতীয় সুরক্ষা আইনের অধীনে অন্তদয় এবং প্রায়োরিটি হাউস হোল্ড স্কীম সহ এপিএল এবং অন্ত্যোদয়-ব্রু স্কিমে নিয়মিত মাসিক বরাদ্দের চালের অতিরিক্ত। এই বাবদ দুমাসে প্রায় দশ হাজার মেট্রিক টন চাল অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণাটি দিয়েছেন খাদ্য ও জনসভরণ দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, ভোক্তারা রেশন শপে ব্যবহৃত পস মেশিনে বায়োমেট্রিক প্রদানে তাদের আধার প্রমাণিকরণ দিয়ে অতিরিক্ত বরাদ্দের এই চাল সংগ্রহ করতে পারবে। বর্তমানে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতাধীন প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড রেশন কার্ডধারী পরিবারদের প্রতি মাসে মাথাপিছু ৫ কেজি এবং অন্ত্যোদয় রেশন কার্ডধারী পরিবারদের প্রতি মাসে কার্ড পিছু ৩৫ কেজি হারে চাল বিনামূল্যে নিয়মিত বরাদ্দ হিসেবে প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো ঘোষণা দেন, খাদ্য গুদামে নিযুক্ত ২৬ জন মহিলার ক্লিনারের দৈনিক মজুরির পরিমাণ ১৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০৬ টাকা করা হয়েছে। তিনি জানান, রাজ্যের সদর মহকুমার অরুন্ধতীনগর স্থিত খাদ্য দপ্তরের সেন্ট্রাল স্টোরে বর্তমানে ২৬ জন মহিলা কর্মী দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে ক্লিনার হিসেবে কাজ করছেন। মূলত খাদ্য গুদামে পিডিএফ সামগ্রী লোডিং অপারেশনের সময় বস্তা থেকে লিকেজ সামগ্রী ছাড়াই ও সংগ্রহ করে থাকেন।
বর্তমানে তাদের দৈনিক মজুরি দেড়শ টাকা হারে প্রদান করা হয়। জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি হওয়া তাদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, এতে করে প্রতিবছর অতিরিক্ত পায় ১২ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারের ব্যয় হবে। যা দপ্তরের ক্যাশ ক্রেডিট একাউন্ট থেকে সংস্থান করা হবে। তিনি আরো ঘোষণা দেন, রাজ্যের বর্তমানে গণ বন্টনের আওতায় মোট ২০৬০ টি ন্যায্য মূল্যের দোকানে রয়েছে। বর্তমানে ৮০০ এবং তার অধিক রেশন কার্ড সম্পৃক্ত ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিকে ভেঙে সারা রাজ্যের মোট ৫১ টি নতুন ন্যায্য মূল্যের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এতে সংশ্লিষ্ট ভোক্তাদের রেশন পরিষেবা গ্রহনে আরও বেশি সুবিধা হবে। পাশাপাশি নতুন রেশন দোকানের জন্য ডিলারশিপ লাইসেন্স প্রদানে মধ্যে দিয়ে আরো কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে জানান মন্ত্রী। আরও জানান, বর্তমানে রাজ্যের রেশন শপগুলিতে গণবণ্টনের আওতাধীন রেশন সামগ্রী ভর্তুকি মূল্য বিতরণ ছাড়াও বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন চা পাতা রান্নার গুঁড়া মশলা, সয়াবিন সুলভ মূল্যে সরবরাহ করা হয়। এক্ষেত্রে একটি নতুন সংযোজন হিসেবে গোমতী ডেয়ারী দ্বারা উৎপাদিত দুগ্ধজাতক সামগ্রী রেশন শপের মাধ্যমে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সদর মহকুমা বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৫ টি রেশন দোকান চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে পাইলট বেসিসে এ পরিষেবা শুরু করা হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে রাজ্যের অন্যান্য মহকুমা এই পরিষেবা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা।